অফিসে অনুপস্থিত থাকলে সর্বোচ্চ কতদিন সমস্যা এড়ানো যায়? এক সপ্তাহ, দু’সপ্তাহ, কিংবা এক মাস? কিন্তু ইতালির এক শিক্ষিকা যা করেছেন, তাতে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। ২৪ বছরের চাকরিজীবনে পাক্কা ২০ বছরই অনুপস্থিত থেকেছেন তিনি। যার ফলে শেষপর্যন্ত চাকরি গেছে তার, মিলেছে ‘ইতালির সবচেয়ে বাজে কর্মী’র খেতাবও।
Advertisement
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে জানা যায়, সিনজিও পাওলিনা দে লিও নামে ওই নারী ভেনিসের কাছাকাছি একটি স্কুলে সাহিত্য ও দর্শনের শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন প্রায় ২৪ বছর আগে। কিন্তু এরপর সব মিলিয়ে মাত্র চার বছর স্কুলে দেখা গেছে তাকে। অবশেষে গত ২২ জুন চাকরিচ্যুত করা হয়েছে ৫৬ বছর বয়সী এ শিক্ষিকাকে।
আরও পড়ুন>> কুকুর হারিয়েছে কমিশনারের, দেড় দিনে ৫০০ বাড়িতে তল্লাশি পুলিশের!
সিনজিওর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি চাকরিজীবনের দুই দশক কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। এর জন্য বিভিন্ন সময় হাজারও অজুহাত দেখিয়েছেন। কখনো অসুস্থতা, কখনো বেড়াতে যাওয়া, কখনো গুরুত্বপূর্ণ সভা কিংবা অসুস্থ আত্মীয়ের দেখভালের কারণ দর্শিয়ে স্কুলে আসেননি তিনি।
Advertisement
আর যখন এসেছেন, তখনো ঠিকমতো দায়িত্বপালন করেননি। তার পড়ানো ছিল অতি নিম্নমানের, পাঠ্যক্রমের অনেক কিছুই ভুলে যেতেন, সঙ্গে বই আনতেন না। এমনকি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সময় মোবাইল ফোনে মেসেজ চালাচালি করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভও করেছে শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন>> বাড়িভাড়া বাঁচাতে প্লেনে চড়ে অফিসে যাতায়াত!
পরে স্কুল ইন্সপেক্টর যাবতীয় অভিযোগ খতিয়ে দেখে বরখাস্ত করেন সিনজিওকে। কিন্তু এরপর বিষয়টি আদালত পর্যন্ত নিয়ে যান এ নারী। আদালতের নির্দেশে সাময়িকভাবে স্থগিত হয় তাকে চাকরিচ্যুতির নির্দেশ।
তবে বিচারক যখন জানতে পারেন, ২৪ বছরে মাত্র চার বছর স্কুলে উপস্থিত ছিলেন সিনজিও, তখন উল্টো ক্ষোভপ্রকাশ করেন।
Advertisement
গত ২২ জুন আদালতের রায়ে বলা হয়, এই নারী কোনোভাবেই কাজের জন্য উপযুক্ত নন। যদিও তার তিন তিনটি ডিগ্রি রয়েছে।
আরও পড়ুন>> স্বামীর মৃত্যুর নাটক সাজিয়ে ক্ষতিপূরণ আদায়ের চেষ্টা নারীর
ইতালীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুসারে, সিনজিও ২০ বছর ছুটি কাটাতে গিয়ে মোট ৬৭টি মেডিক্যাল সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন। কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কারণে দু’বার এবং স্বাস্থ্যগত কারণে আরও তিনবার ছুটি নিয়েছেন। এছাড়া, সন্তানের যত্ন নেওয়ার জন্য ছুটি কাটিয়েছেন, প্রতিবন্ধী আত্মীয়দের সহায়তা করার জন্যেও বেশ কয়েক দিন ছুটি নিয়েছিলেন। এমনকি প্রশিক্ষণ কোর্সের জন্য আরও পাঁচবার ছুটি নিয়েছেন অভিযুক্ত নারী।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে সিনজিওর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন সাংবাদিকরা। কিন্তু ‘সমুদ্র সৈকতে থাকায়’ কারও সঙ্গে কথা বলেননি তিনি।
সূত্র: ডেইলি মেইল, এনডিটিভিকেএএ/