মোংলার ঐতিহ্যবাহী চটেরহাটে এবার প্রচুর গরু এসেছে। তবে হাটে ভারতীয় কোনো গরু না ঢোকায় বিক্রেতারা দামও হাঁকছেন চড়া। এতে কাঙ্ক্ষিত দামে গরু কিনতে না পেরে হতাশ ক্রেতারা।
Advertisement
গরু ব্যবসায়ীরা জানান, শাহীওয়াল, ফ্রিজিয়ানসহ দেশি জাতের গরু মোটাতাজা করেছেন তারা। আকারে বড় ও দেখতে সুন্দর হওয়ায় বিত্তবানদের কাছে শাহীওয়াল ও ফ্রিজিয়ান গরুর চাহিদা বেশি। আর মধ্যবিত্তরা দেশি মাঝারি ও ছোট গরুর দিকে ঝুঁকছেন।
তবে লবণাক্ততাপ্রবণ এ এলাকায় পর্যাপ্ত ঘাস ও খড় না থাকায় বিকল্প খাবার কিনে খাওয়াতে হয় গরুকে। খাবারের দাম বাড়ায় গরু পালনে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে খামারিদের। তারপরও বাজারে ভারতীয় গরু না থাকায় লাভের আশা করছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) সকালে চটেরহাটে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাটে গরু প্রচুর গরু এসেছে। দূর-দূরান্ত থেকে খামারিরা নসিমন ও করিমনে করে হাটে গরু নিয়ে এসেছেন। হাটে ভারতের গরু-মহিষ না থাকায় দেশি গরুর চাহিদা ও দাম বেড়েছে।
Advertisement
গরু ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, এবার গরুর দাম বেশি হওয়ায় বেচাকেনা তেমন জমে ওঠেনি। তিনি এবার ৩০টি গরু হাটে আনলেও এখন পর্যন্ত সাতটি বিক্রি করেছেন।
পৌর শহরের মিয়াপাড়া এলাকার খামারি মাসুদ জানান, তিনি গতবছর ৪৫টি গরু প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে মোটাতাজা করেছিলেন। গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এবার মাত্র ২৫টি গরু মোটাতাজা করে কোরবানির হাটে এনেছেন। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত ৯টি গরু বিক্রি করেছেন।
তবে এবার হাটে পর্যাপ্ত পশু উঠলেও দাম চড়া হওয়াতে বেচাকেনা কম। ক্রেতারা বলছেন, গতবারের তুলনায় দাম অনেক বেশি তাই কোরবানির পশু কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বেশির ভাগ লোককেই দেখা গেছে পশু কিনতে না পেরে খালি হাতে ফিরে যেতে। দাম বেশি হওয়াতে হতাশ ক্রেতারা।
হাটে গরু কিনতে আসা মাহবুবুর রহমান টুটুল, জাহাঙ্গীর, সেলিম ও বেল্লাল জানান, গত তিনদিন হাটে ঘুরেও গরু কিনতে পারেননি। গত বছরের তুলনায় দাম অনেক বেশি। এবার যে টাকা লাগছে তা সাধ্যের বাইরে। তারপরও গরু কিনতে হবে কিছু করার নেই।
Advertisement
চটেরহাটের ইজারাদার মোস্তফা ইজারাদার বলেন, হাটে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত, জাল টাকা শনাক্ত, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের তদারকির পাশাপাশি অন্য হাটের তুলনায় খাজনাও কম নেওয়া হচ্ছে। তবে পশুর দাম বেশি হওয়ায় বেচাবিক্রি কম।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুউদ্দীন জানান, পশুর হাটে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন তারা। এছাড়া ক্রেতারা যেন পশু কিনে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন সেজন্য শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের নজরদারি রয়েছে।
আবু হোসাইন সুমন/এমআরআর/এএসএম