গত দুই মাসে পাঁচ কোটি টাকার জাল নোট বাজারে ছাড়া হয়েছে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আরও দুই কোটি টাকার জাল নোট তৈরির পরিকল্পনা ছিল। এরই মধ্যে ৮২ লাখ টাকার জাল নোট তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেসব জাল নোট বাজারে ছাড়ার আগেই ডিবির হাতে ধরা পড়েছে চক্রটির মূলহোতা বাবুলসহ নয়জন। আর এসব জাল নোট বিক্রির টাকা দিয়ে বাবুল করেছেন গাড়ি-বাড়ি। শুধু তাই নয়, একাধিক বিয়ে করে তাদের দিয়েও করিয়েছেন জাল নোট তৈরির ব্যবসা।
Advertisement
সোমবার (২৬ জুন) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
আরও পড়ুন: জাল নোট চেনার ৭ উপায়
তিনি বলেন, রোববার (২৫ জুন) পুরান ঢাকার লালবাগের কাশ্মীরি লেন এলাকার একটি ভবনের ছয় এবং তিনতলায় অভিযান চালিয়ে জাল টাকা তৈরির কারখানা আবিষ্কার করে গোয়েন্দা পুলিশ। সেখানে জাল টাকা তৈরির সময় কারখানার মালিক বাবুল মিয়া, তার স্ত্রী মিনারা খাতুন, মূল কারিগর সাইফুল ইসলাম, তার স্ত্রী মিলি খাতুন, নারী কারিগর আলপনা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়। একই সঙ্গে তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয় ৮২ লাখ জাল টাকা।
Advertisement
এছাড়া জাল টাকা তৈরির কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, প্রিন্টার, জলছাপ যুক্ত বিশেষ কাগজ, বিভিন্ন রকমের মনোগ্রাম সম্বলিত স্ক্রিন, ডাইস, বিভিন্ন রং, কাগজ কাটার যন্ত্র, কাচি, চাকুসহ জাল টাকা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এছাড়া দোকানে জাল টাকা খুচরা বিক্রি করতে গিয়ে যেসব পণ্য কেনা হয় তার মধ্য থেকে কিছু কম দামের শাড়ি, লুঙ্গি ও গামছা উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: অনলাইন-হোম ডেলিভারিতে মিলছে জাল টাকার নোট
ডিবিপ্রধান বলেন, গোয়েন্দা সূত্র ধরে কাশ্মীরি লেনের স্বপ্ন শপিং মার্কেটের পাশের একটা গলিতে চারজনকে সন্দেহজনকভাবে চলে যেতে দেখে, তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ এবং শরীর তল্লাশি করে প্রায় ২৫ লাখ জাল টাকা উদ্ধার করা হয়। এসময় তাৎক্ষণিকভাবে তাদের জিজ্ঞাসা করলে জাল টাকার উৎস স্থলে নিয়ে যেতে সম্মত হয়। গ্রেফতার এসব ব্যক্তিরা হলেন- ইব্রাহিম, আফাজুল ওরফে রাসেল, হাবিবুল্লাহ এবং দুলাল হোসেন। পরে তাদের দেখানো বাড়িটির তৃতীয় এবং ষষ্ঠ তলায় অভিযান চালিয়ে ঘরোয়া কারখানাটি আবিষ্কার করা হয়।
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, এরমধ্যে মূলহোতা বাবুল জাল টাকা নিয়ে এর আগে পাঁচবার গ্রেফতার হয়েছেন। আর তার স্ত্রী মিনারা খাতুন তিনবার এবং সাইফুল ইসলাম দুবার বিভিন্ন মেয়াদে জেলহাজতে ছিলেন। জামিনে মুক্তি পেতে তাদের লাখ লাখ টাকা খরচ হয়। উচ্চসুদে ধার নেওয়া ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে আবারও তারা একই কাজে জড়িত হন।
Advertisement
আরও পড়ুন: টাকার বিনিময়ে ভোট, পরে দেখেন জাল নোট!
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। চক্রের বাকিদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান ডিবিপ্রধান।
আরএসএম/জেডএইচ/এএসএম