দেশজুড়ে

যৌবন হারিয়েছে ঢাকা-পটুয়াখালী নৌরুট

একটা সময় ছিল যখন ঢাকা-পটুয়াখালী নৌরুটের ডাবল ডেকার যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোতে একটি সিঙ্গেল কেবিন পেতে রীতিমতো তদবির করতে হতো। প্রতিদিন বিকেলে পটুয়াখালী এবং ঢাকা সদরঘাট থেকেই তিন-চারটি লঞ্চ চলাচল করতো। ঈদের সময় তা গিয়ে ঠেকতো ৮ থেকে ১০টিতে। তবে সেসব দিন এখন অতীত, পটুয়াখালী-ঢাকা নৌরুটে এখন একটি মাত্র লঞ্চ চলাচল করলেও তাতেও তেমন কোনো যাত্রী পাওয়া যায় না। লঞ্চের অধিকাংশ কেবিন থাকে ফাঁকা। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতির একমাত্র কারণ পদ্মাা সেতু।

Advertisement

এখন ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর বিভিন্ন রুটে অন্তত অর্ধশত বাস চলাচল করে। সব মিলিয়ে ঢাকা থেকে পটুয়াখালী আসতে চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা সময় লাগছে। আগে যেখানে সময় লাগতো ১০-১২ ঘণ্টা। এ কারণে লঞ্চঘাটগুলোতে এখন আর সেই চিরচেনা রূপ নেই।

আরও পড়ুন: ঢাকার যানজটে মাদারীপুর থেকে অফিস করার স্বপ্ন অধরা 

পটুয়াখালী লঞ্চঘাটে দীর্ঘদিন ইজারার দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার ফারুক মৃধা বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন পটুয়াখালী জেলা শহরের সব মালামাল পরিবহন হতো লঞ্চে। তখন লঞ্চঘাটের শুধু পণ্য পরিবহনের ইজারাবাবদ কোটি টাকার ওপর ডাক হতো। এখন সেই ঘাটে শুধুই নীরবতা। একটি লঞ্চ চলাচল করে, তাতেও তেমন কোনো যাত্রী কিংবা পণ্য নেই। পাশাপাশি আগের ঈদের সময়গুলোতে অন্তত ১৫ দিন মানুষ কেবিনের জন্য পাগল করে দিতো, কিন্তু এখন আর তেমনটা নেই। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এখন যাত্রীরা যেমন লঞ্চে চলাচল করেন না, তেমনি ব্যবসায়ীরাও তাদের মালামাল সড়ক পথে নিয়ে আসেন। সব মিলিয়ে লঞ্চঘাট এখন নিষ্প্রাণ।

Advertisement

পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন বলেন, পদ্মা সেতু পটুয়াখালীসহ দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। এখন চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টায় ঢাকায় আশা যাওয়া করা যায়। এ কারণে ব্যবসায়ীরা দ্রুত পণ্য আনা-নেওয়া করতে পারেন। পাশপাশি পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এখন কুয়াকাটাসহ পায়রা সমুদ্র্র বন্দর এবং এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য দিনকে দিন প্রসার ঘটছে। তবে আগে লঞ্চনির্ভর আমাদের যে যাতায়াত তা এখন আর নেই বললেই চলে।

আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গায় সেপ্টেম্বরে চলবে ট্রেন 

পটুয়াখালী-ঢাকা নৌরুটে লঞ্চগুলো প্রতিদিন বিকেলে ঢাকা এবং পটুয়াখালী থেকে ছেড়ে যায়। বিকেলে ছেড়ে আসা লঞ্চগুলো পরদিন সকালে গন্তব্যে পৌঁছায়। ফলে যাত্রীদের সারারাত লঞ্চেই অবস্থান করতে হয়।

আব্দুস সালাম আরিফ/এসএইচএস/জিকেএস

Advertisement