দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে স্মার্টফোন। বর্তমানে স্মার্টফোন ছাড়া তরুণ প্রজন্মের একটি দিনও চলে না। দূর-দূরান্তে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে, মেইল কিংবা গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ট্রান্সফার করতে চাইলেও চাই স্মার্টফোন।
Advertisement
একদিকে স্মার্টফোন আমাদের কাজগুলোকে অনেক সহজ করেছে; অন্যদিকে স্মার্টফোনের ব্যবহার অনেক ব্যবসার পতন ঘটিয়েছে! এর মধ্যে অন্যতম স্টুডিও। নব্বই দশকের লাভজনক ব্যবসা এখন গ্রাহকশূন্য।
ভালো রেজ্যুলেশনের ফোন থাকায় এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে স্টুডিও ব্যবসা। অথচ একটা সময় স্টুডিওতে লাইন লেগে থাকতো। ফটোগ্রাফারের হাত ব্যথা হয়ে যেত ছবি তুলতে তুলতে। প্রয়োজনের বাইরে শখের বসেও ছবি তুলতেন অনেকে। ছবির ডেলিভারিতে সময় লাগতো দুই থেকে তিন দিন।
ঈদ, পহেলা বৈশাখ, ছুটির দিনে ঘুরতে বের হলেই স্বামী-স্ত্রী, বন্ধু-বান্ধব হানা দিতো স্টুডিওতে। স্টুডিওর দেওয়ালে থাকতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবি। সাদা, নীল ব্যাকগ্রাউন্ডের ব্যবস্থাও ছিল। মডেলিং ছবি কিংবা পাসপোর্ট সব ধরনের ছবিই স্টুডিওতে তোলা হতো।
Advertisement
তবে যারা এখনো স্টুডিও ব্যবসা ধরে রেখেছেন তারা করছেন সাইড ব্যবসা হিসেবে। স্টুডিও এখন দোকানে রূপান্তরিত হয়েছে। দোকানিরা প্রিন্টিং মেশিনে ফটোকপি, খাতা স্পাইরাল বাইন্ডিং, মানি ট্রানজেকশন, রিচার্জ, কম্পিউটারে এডিটিংয়ের কাজ ইত্যাদি করেন। অন্যথায় শুধু ছবি তুলে দোকান ভাড়া ওঠানোও কষ্টসাধ্য।
আরও পড়ুন: সেই হাঁক-ডাক নেই কটকটি বিক্রেতাদের
যারা দোকানে কিংবা স্টুডিওতে ছবি তুলতে আসেন অধিকাংশই স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা চাকরির পরীক্ষার জন্য ‘আপডেট’ ছবি তুলতে আসা শিক্ষার্থী। অন্য গ্রাহক একেবারেই কম। তবে এ ক্ষেত্রেও অনেকে ফোনে ছবি তুলে স্টুডিওতে আসেন শুধু ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা করতে ও প্রিন্ট করতেই।
আমাদের বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন কিংবা পাড়া-প্রতিবেশীর মধ্যে যারা মধ্যবয়সী, তাদের কারও কারও বাসায় গেলে দেখা মিলবে; নব্বই দশকের স্টুডিওতে তোলা দুর্লভ ছবি। তাদের সময়ে ছবি তোলা মানেই ছিল এক অন্যরকম আনন্দ। তাদের সময় মন ভালো করার হাতিয়ার ছিল স্টুডিওতে ছবি তোলা। গাছপালা, নদী, পাহাড়, জঙ্গলের ব্যাকগ্রাউন্ডে ছবি তোলা ছিল সে সময়ে শখের বিষয়।
Advertisement
তবে এখন তা অতীত। এখন ঘরের দেওয়ালের চেয়ে ছবি বেশি থাকে ফোনের দেওয়ালে। নিজের সেলফি কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে কাটানো কোনো প্রিয় মুহূর্ত ফ্রেমবন্দি করে রেখে দেন ফোনের ওয়ালপেপারে।
কেএসকে/এসইউ/এএসএম