ধর্ম

যাদের হজ করার সামর্থ্য নেই, তারা কী আমল করবেন?

সম্পদ ও শারীরিক সক্ষমতার ইবাদত হজ। সম্পদ আছে কিন্তু শারীরিক সক্ষমতা নেই, সে ব্যক্তি হজে যেতে পারে না, অন্যের মাধ্যমে হজ আদায় করাতে হয়। আর যাদের শারীরিক সক্ষমতা আছে কিংবা নেই কিন্তু সম্পদ নেই; তারা কী করবেন? এমন কী আমল আছে; যার বিনিময় তারা হজের সওয়াব পাবেন?

Advertisement

হ্যাঁ, এমন কিছু আমল আছে, যার বিনিময়ে মহান আল্লাহ ওই আমলকারীকে হজের সওয়াব দান করবেন। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা বর্ণনা করেছেন। তাহলো-

১. মসজিদে জামাতে নামাজ পড়া

হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায় করলো সে যেন হজ করে এলো। আর যে ব্যক্তি নফল নামাজ আদায় করতে মসজিদে গমন করলো সে যেন ওমরা করে এলো। (তাবারানি)

Advertisement

২. মসজিদে ইশরাক পড়া

ফজরের নামাজ আদায়ের পর মসজিদে সূর্য ওঠা পর্যন্ত অবস্থান করা এবং ইশরাকের নামাজ পড়া। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করলো, তারপর সূর্যোদয় পর্যন্ত মসজিদে বসে আল্লাহর জিকির করলো, এরপর দুই রাকাত (ইশরাকের) নামাজ আদায় করলো, সে ব্যক্তি হজ ও ওমরার সওয়াব নিয়ে ফিরলো। (তিরমিজি)

৩. মসজিদে গিয়ে দ্বীন শেখা বা শেখানো

Advertisement

হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মসজিদে গেলো কোনো ভালো কথা শেখা বা শেখানোর উদ্দেশ্যে; সে পরিপূর্ণরূপে হজ আদায়কারী একজন ব্যক্তির ন্যায় সওয়াব পাবে। (তাবারানি)

৪. রমজান মাসে ওমরা করা

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘রমজানে ওমরা করলে আমার সঙ্গে হজ আদায়ের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে।’ (বুখারি, মুসলিম)

৫. মসজিদে কোবায় নামাজ পড়া

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজ ঘরে পবিত্রতা অর্জন করলো, এরপর মসজিদে কোবায় এসে কোনো নামাজ আদায় করলো, সে ওমরার সওয়াব অর্জন করলো।’ (ইবনে মাজাহ)

৬. বাবা-মায়ের খেদমত করা

হজরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললো, আমি জিহাদে অংশগ্রহণ করতে চাই, কিন্তু আমার সেই সামর্থ ও সক্ষমতা নেই। নবিজি প্রশ্ন করলেন, তোমার বাবা-মা কেউ কি জীবিত আছেন?

লোকটি বলল, আমার মা জীবিত আছেন। উত্তরে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তাহলে মায়ের খেদমত করে আল্লাহর কাছে জিহাদে যেতে না পারার অপারগতা বা ওজর পেশ কর। এভাবে যদি করতে পারো এবং তোমার মা সন্তুষ্ট থাকেন তবে তুমি হজ, ওমরাহ এবং জিহাদের সওয়াব পেয়ে যাবে। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো এবং মায়ের খেদমত করো।’ (মাজমাউয যাওয়াইদ)

সুতরাং যারা হজ করার সামর্থ্য রাখে না তাদের উচিত, উল্লেখিত আমলগুলো বেশি বেশি আদায় করা। যে আমলগুলোর মাধ্যমে নবিজির ঘোষণা অনুযায়ী তারা পাবেন হজ ও ওমরা করার সওয়াব।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে হজ ও ওমরা করার তাওফিক দান করুন। সামর্থ্য না থাকলে উল্লেখিত আমলগুলো বেশি বেশি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম