দেশজুড়ে

ফের সেতাবগঞ্জ চিনিকল চালুর স্বপ্ন দেখাচ্ছে বর্জ্য শোধনাগার

দিনাজপুর জেলার একমাত্র ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান সেতাবগঞ্জ চিনিকলে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইপিটি) নির্মাণ হওয়ায় আবারো চালুর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে চিনিকলটির। এতে আবারো আশায় বুক বাঁধছেন চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীরা।

Advertisement

১ মে শ্রমিক সমাবেশে নৗ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ঘোষণা দেন নতুন ব্যবস্থাপনায় সেতাবগঞ্জ চিনিকল চালু করা হবে। এছাড়া বাংলাদেশ চিনিশিল্প ও খাদ্য করপোরেশনও তাদের প্রতিবেদনে আখ মাড়াই বন্ধ থাকা চিনিকলগুলোর মধ্যে সেতাবগঞ্জ চিনিকলটির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছে।

এক সময় সেতাবগঞ্জ চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীতে মুখর থাকতো বোচাগঞ্জ উপজেলা। কিন্তু বছরের পর বছর লোকসান করায় ৪০০ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে চিনিকলটির আখ মাড়াই কার্যক্রম স্থগিত করে দেয় সরকার। শ্রমিকদের বদলি করা হয় বিভিন্ন চিনিকলে।

কিন্তু বন্ধ হওয়ার আগে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের বাস্তবায়নাধীন ও বাংলাদেশ সরকারের (জিওবি) অর্থায়নে বর্জ্য শোধনাগারের কাজ শুরু হয় ১ জুলাই ২০১৮ সালে। ৮ কোটি ১০ লাখ ৩১ হাজার টাকা ব্যয়ে চলে বর্জ্য শোধনাগারের কাজ। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবিএম ওয়াটার কোম্পানি লি. বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেনি। অতিরিক্ত ৩ বছর পার হলেও সেতাবঞ্জ চিনিকলের শোধনাগারটি এখনো কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেনি তারা।

Advertisement

একইসঙ্গে বন্ধ অন্যান্য ৫টি মিলেও বর্জ্য শোধানাগার নির্মাণ করা হয়। ৬টি চিনিকলের বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণে মোট ব্যয় হয় ৪৮ কোটি ৬১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।

সেতাবগঞ্জ চিনিকলের বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) এখন কোনো কাজে না এলেও মিলের শ্রমিক, কর্মচারী এবং এলাকার মানুষের ধারণা চিনিকলটিতে পুনরায় আখমাড়াই চালু করা হবে বলেই এটি নির্মাণ করা হয়েছে।

সেতাবগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি প্রশান্ত কুমার চৌহান বলেন, চিনিকলে আখ মাড়াই কার্যক্রম স্থগিত রাখার বিষয়টি দুঃখজনক। অনেক শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বর্জ্য পরিশোধনাগারটি বর্তমানে কোনো কাজে না আসলেও বন্ধ সব চিনিকলে তা নির্মাণ করায় মিলগুলোতে আবারো আখ মাড়াই শুরু হতে পারে।

অপরদিকে বাংলাদেশ চিনি শিল্প ও খাদ্য করপোরেশনও তাদের প্রতিবেদনে আখ মাড়াই বন্ধ থাকা চিনিকলগুলোর মধ্যে সেতাবগঞ্জ চিনিকলটির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে ২০২২ সালে সার্ভে করে রিপোর্ট দিয়েছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিনিকলের এক কর্মকর্তা।

Advertisement

এছাড়া চলতি বছরের ১ মে বোচাগঞ্জে শ্রমিক সমাবেশে সমাবেশে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ঘোষণা দেন নতুন ব্যবস্থাপনায় সেতাবগঞ্জ চিনিকল চালু করা হবে। সেই থেকে সেতাবগঞ্জ চিনিকলের শ্রমিক, কর্মচারীরা আশায় বুক বেঁধেছেন চিনিকলটি আবারো চালু হবে।

সেতাবগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর জানান, এই চিনিকলের বর্জ্য শোধনাগারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবিএম ওয়াটার কোম্পানি লি. আমাদের কাছে এখনো হস্তান্তর করেনি। তবে চিনিকলের উৎপাদন চালু থাকলে স্থাপিত শোধনাগারটির ব্যবহার করে সুফল পাওয়া যেত।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, অতি অল্প সময়ে সেতাবগঞ্জ চিনিকলটি উৎপাদনে ফিরে আসবে এবং বর্জ্য শোধনাগারটি চালু হবে।

এফএ/এমএস