মঙ্গলবার বেশ রাতে ক্রিকেট পাড়ায় হঠাৎ গুঞ্জন, আফগানদের বিপক্ষে ওয়ানডে স্কোয়াডের বাইরে আরও তিনজনকে নতুন করে অনুশীলনে ডাকা হয়েছে। তারা কারা?
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও শেখ মাহদিকেও আজ থেকে যে প্র্যাকটিস শুরু তাতে ডাকা হয়েছে। যদিও বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ক্রিকেট বোর্ড থেকে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।
তবে ভেতরের খবর, ঘটনা সত্য। জাতীয় দলের অন্যতম নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন, বুধবার সকালে জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। হাবিবুল বাশার জানান, ‘হ্যাঁ সৌম্য, মোসাদ্দেক ও শেখ মাহদিকে অনুশীলনে ডাকা হয়েছে।’
তবে কি তারা স্কোয়াডের অংশ? নির্বাচক বাশারের পরিষ্কার জবাব, ‘নাহ! তারা ওয়ানডে স্কোয়াডের অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে না।’
Advertisement
তবে কি হিসেবে তাদের ডাকা? হাবিবুল বাশার জানালেন, মূলতঃ কোচের ইচ্ছায় এ তিনজনকে ডাকা হয়েছে। তারা ২১, ২২ ও ২৪ জুন শেরে বাংলায় টিমের সাথে অনুশীলন করবে। কারণ কোচ হাথুরুসিংহে তাদের খুঁটিয়ে দেখতে চেয়েছেন। হাথুরু চেয়েছেন বলেই তারা ওয়ানডে দলের সাথে অনুশীলন করবেন।
অনুশীলন করে ঈদের পর তারা বেঙ্গল টাইগার্সের অনুশীলনে যোগ দেবেন। আর মোসাদ্দেক ছাড়া সৌম্য ও শেখ মাহদি ইমার্জিং দলের হয়ে শ্রীলঙ্কা যাবেন এশিয়ান ইমার্জিং টুর্নামেন্ট খেলতে।
সুমনের কথায় পরিষ্কার, ‘কোচ এ তিনজনকে দেখতে চেয়েছেন। ঢাকায় তিন দিনের প্র্যাকটিসে খুটিয়ে দেখা হবে সৌম্য, মোসাদ্দেক ও শেখ মাহদির সর্বশেষ অবস্থা।’
দেশে আরও ক্রিকেটার আছেন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তাদের চেয়ে অনেক বেশি ভাল পারফর্ম করেছেন, অনেক বেশি রানও করেছেন এনামুল হক বিজয়, সাইফ হাসান, ইরফান শুক্কুর, ফজলে মাহমুদ রাব্বি, পারভেজ হোসেন ইমন, মাহিদুল ইসলাম অংকন, হাসান মুরাদ, তানভির ইসলাম ও পেসার রবিউল ইসলাম উইকেট শিকারে একদম ওপরের দিকে জায়গা করে নিয়েছেন। তাদের না ডেকে কেন কোচ হঠাৎ সৌম্য, মোসাদ্দেক ও শেখ মাহদির দিকে ঝুঁকলেন?
Advertisement
সে প্রশ্ন তোলাই যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৌম্যর প্রতি হাথুরুর দুর্বলতা আগের। তিনি নতুন করে দায়িত্ব নিয়ে সৌম্যকে দলে পেতে চেয়েওছিলেন। জাগো নিউজে এ নিয়ে কয়েক সপ্তাহ আগে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। দ্বিতীয়বার কাজ শুরু করে সৌম্যর সর্বশেষ অবস্থা জানতে চেয়েছিলেন টাইগার হেড কোচ। তাকে ডাকা যায় কিনা, তাও বলেছিলেন। তাই বোঝাই যায়, হাথুরু আসলে সৌম্যকে নিজ চোখে দেখতে চাচ্ছেন।
আর মোসাদ্দেক ও শেখ মাহদিকে ডাকার কারণ ভিন্ন। দলে মেহেদি হাসান মিরাজ ছাড়া কোন অফস্পিন অলরাউন্ডার নেই। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ উপাখ্যান ধরা যায় শেষ। এ সিনিয়র মিডলঅর্ডার কাম অফস্পিনার এবার হজে গেছেন। তাই আফগানদের বিপক্ষে সিরিজে নেই। আগামীতে এশিয়া কাপ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে থাকবেন; সে সম্ভাবনা প্রায় শুন্যের কোঠায়।
এদিকে ওপরের দিকে তামিম, লিটন, শান্ত, মুশফিকের কেউ ঘরোয়া ক্রিকেটে অফস্পিন করেন না। শান্ত মাঝে-মধ্যে হাত ঘোরালেও বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে তার অফ স্পিনতো চলবে না। এমন কাউকে প্রয়োজন, যিনি অফস্পিনার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত, আগে জাতীয় দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেনও।
বিশ্বকাপে মিডল অর্ডার কাম অফস্পিনার হিসেবে একজন বাড়তি পারফরমার দরকার। সে ক্যাটাগরিতে আছেন তিনজন- নাসির হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আর শেখ মাহদি। নাসিরের পারফরমেন্সে ধারাবাহিকতা অভাব সুস্পষ্ট। তাকে তাই বিশ্বকাপে বিবেচনার অবকাশ নেই।
মোসাদ্দেক ও শেখ মাহদিকে তাই খুঁটিয়ে দেখতে চান হেড কোচ। মিডল অর্ডার কাম অফস্পিনার হিসেবে এ দু’জনার কেউ কোচের মন জয় করতে পারলে আগামীতে বিশেষ বিবেচনায় আসতেও পারেন।
সেক্ষেত্রে ৩ দিনের এ অনুশীলন ক্যাম্পে শুধু প্র্যাকটিস করার সুযোগে কপাল খুলে যেতে পারে মোসাদ্দেক, শেখ মাহদি আর সৌম্য যে কারোর।
এআরবি/আইএইচএস