দেশজুড়ে

খাগড়াছড়িতে জমে উঠেছে দেশি গরুর হাট

আর কয়েকদিন বাদেই দেশে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। তাই সবাই নিজ সামর্থ্যের মধ্যে পছন্দের কোরবানির পশু কিনতে ছুটছেন হাট থেকে হাটে। এখন পছন্দের পশু কেনাই যেন সবার কাছে মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement

অন্য বছরের মতো এবারও পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ি থেকে বিপুল সংখ্যক গরু পাশের চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা ও নোয়াখালী যাচ্ছে। এখানকার পশুর হাটে সমতল জেলার ব্যাপারীদের ব্যাপক আনাগোনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তারা পাহাড়ি পাড়া ঘুরে ঘুরেও গরু কিনছেন। আর প্রতিদিনই ট্রাকবোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছেন সমতলের জেলাগুলোতে।

এদিকে, ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে খাগড়াছড়ির কোরবানির হাট এখন বেশ সরগরম। দীঘিনালার বোয়ালখালী, মেরুং, মহালছড়ির মাইসছড়ি, রামগড়ের সোনাইপুল, মানিকছড়ি, গুইমারা, মাটিরাঙ্গা, পানছড়ি ও খাগড়াছড়ি সদরের বিভিন্ন পশুর হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনার ধুম পড়েছে।

ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্য বছরের তুলনায় এবছর দেশি জাতের পাহাড়ি গরুর দাম কিছুটা বেশি। স্থানীয় বাজারগুলোতে ৫০ হাজার থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে দেশি গরু। ছোট আকারের গরু ৫০ থেকে ৭০ হাজার, মাঝারি গরু ৭০ থেকে এক লাখ টাকা আর বড় আকারের গরু লাখ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে।

Advertisement

সম্প্রতি খাগড়াছড়ির তাইন্দং, শান্তিপুর ও গোমতি পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে বিভিন্ন আকারের গরুর পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। হাটে পাশের চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লার ও নোয়াখালী থেকে আসা ব্যাপারীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

কোরবানির গরু কিনতে ফেনী থেকে আসা ব্যবসায়ী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, দাম একটু বেশি হলেও পাহাড়ের দেশি গরুতেই আমার আস্থা। আর তাই এত দূর থেকে ছুটে এসেছি নিজের পছন্দের কোরবানির পশুটি ক্রয় করতে।

নোয়াখালীর চাটখিল থেকে আসা সরকারি চাকরিজীবী মোজাম্মেল হোসেন বলেন, গত ৫/৭ বছর ধরেই আমি খাগড়াছড়ির দেশি গরু নিয়ে থাকি। দাম নয়, আমার কাছে কোরবানির পছন্দের গরুটিই মুখ্য। সেক্ষেত্রে পাহাড়ের দেশি গরুতেই আমার আস্থা।

খাগড়াছড়ির গরু সমতলের বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার কারণে এখানকার বাজারে দাম চড়া বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী মো. জসিম উদ্দিন। তবে দাম চড়া হলেও তার কোরবানির প্রথম পছন্দ পাহাড়ের দেশি গরু।

Advertisement

গরু বিক্রি করতে আসা স্থানীয় কৃষক ও খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো ধরনের ওষুধ ব্যবহার না করে প্রাকৃতিকভাবে এখানকার গরু পালন করা হয়ে থাকে। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠার কারণেই কোরবানির জন্য সমতলের জেলাগুলোতে পাহাড়ের এসব দেশি গরুর বেশ কদর রয়েছে। ফলে প্রতি বছরের মতো এবারও সমতল থেকে বহু ক্রেতা খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পশুর হাটে আসেন। আবার অনেকেই এখান থেকে পশু কিনে সমতলে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতেও পাঠান।

খামারি গিয়াসুদ্দিন সবুজ বলেন, কোরবানির পশু নিতে ক্রেতারা পাহাড়ে আসছেন। তারা বরাবরই পাহাড়ের দেশি গরুর ওপর আস্থা রেখেছেন।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সমাপন চাকমা বলেন, এখানকার গরু কোনো ধরনের মোটাতাজাকরণ ওষুধ ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। তাই সমতলের লোকজনের কাছে খাগড়াছড়িসহ পাহাড়ের দেশি জাতের গরুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এমআরআর/এমএস