যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮শ কোটি টাকা চুরির ঘটনা তদন্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করবে সরকার। এ কমিটিতে বিশেষজ্ঞসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা থাকবেন। কমিটি এর ঘটনার আদ্যেপান্ত উদঘাটনে কাজ করবে। রোববার বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলম এ কথা বলেন।তিনি বলেন, আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই এ কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটির সদস্য হবেন চারজন। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর দেশের বাইরে। তিনি সোমবার দেশে ফিরবেন। এ কারণে মঙ্গলবার পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে।বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়া এ ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ফায়ারআই ইনক ম্যানডিয়েন্ট ফরেনসিক বিভাগের সহযোগিতা নিচ্ছে বলে ইতোমধ্যে খবর দিয়েছে রয়টার্স। এম আসলাম আলম বলেন, আমি ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্য। আমি নিজেও সংবাদপত্রে পরিবেশিত সংবাদের মাধ্যমে এতবড় ঘটনাটি জানতে পেরেছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিৎ ছিল ঘটনাটি পরিচালনা পর্ষদ ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানানো। চলতি মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের দুটি সভায়ও বিষয়টি তোলা হয়নি।৮শ কোটি টাকা চুরির ঘটনায় ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি। এই হ্যাকিংয়ের ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি ব্যবস্থাপনার ‘দুর্বলতা ও ত্রুটি’ বেরিয়ে এসেছে বলেও মন্তব্য করেন এম আসলাম। তবে তিনি আশ্বস্ত করেন, ‘এখন আমাদের রিজার্ভ নিরাপদ। সবগুলো সার্ভার পরিবর্তন করা হয়েছে।’তিনি বলেন, ৪ ফেব্রুয়ারি ঘটনা ঘটার পরে সংশ্লিষ্ট বিভাগের লোকজন এসে কম্পিউটারে কাজ করতে পারছিলেন না। তখন পুরো সিস্টেম হ্যাকারদের দখলে চলে গেছে। এরপর দুই দিন তা তাদের দখলেই ছিল। কোনভাবেই কাজ করতে পারছিলেন না। পরে তা আইটিকে জানালে সিস্টেম বন্ধ করে দেয়া হয়। এত ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরও বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি গোপন রেখেছিল। কী কারণে এমনটা করা হয়েছে তা তদন্ত করা হবে। উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে সঞ্চিত বাংলাদেশে ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা থেকে ৮শ কোটি টাকা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সরিয়ে নেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি ধামা চাপা দিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও ফিলিপাইনের একটি সংবাদ মাধ্যমে তা ফাঁস করে দেয়। মূলত ফিলিপাইনের কয়েকটি ক্যাসিনোর মাধ্যমে এ টাকা পাচার করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, চুরি যাওয়া অর্থের কিছু উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ফিলিপাইনের অর্থ পাচারবিরোধী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করে বাকি অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।এসএ/এনএফ/এবিএস
Advertisement