দেশজুড়ে

পাহাড়ে বাড়ছে তামাক চাষ

দিন দিন রাঙ্গামাটিতে বাড়ছে তামাক চাষ। জেলার কাপ্তাই, বরকল, বাঘাইছড়ি, লংগদুসহ বিভিন্ন উপজেলায় তামাক চাষ বেড়েছে। এতে পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি পাহাড়িদের মধ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে।

Advertisement

কাপ্তাই উপজেলার ৫ নম্বর ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ওয়াগ্গাছড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একপাশে তামাক চাষ হচ্ছে, অন্যপাশে চুল্লিতে পোড়ানো হচ্ছে তামাক পাতা। এতে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে পরিবেশ। স্বল্প ব্যয়ে অধিক লাভের আশায় তামাক চাষে আগ্রহ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

কাপ্তাইয়ের তামাক চাষি শাহ আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘দীর্ঘ ৩০-৩৫ বছর ধরে কোম্পানি থেকে ঋণ নিয়ে তামাক চাষ করছি। এ কাজে আমাদের কেউ বাঁধা দেয়নি। পাতা উপযুক্ত হয়ে উঠলে কোম্পানির লোকেরা এসে পাতা নিয়ে যান।’

বাঘাইছড়ির তামাক চাষি আবদুল রব বলেন, ‘চার বিঘা জমিতে তামাক চাষ করছি। আগে বিভিন্ন শাকসবজির চাষ করতাম। কিন্তু সেগুলোর তুলনায় তামাক চাষে আয় বেশি হওয়ায় এই চাষে ঝুঁকেছি।’

Advertisement

স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তামাক চাষে স্বাস্থ্যের বিভিন্ন ক্ষতি হয় জানি। কিন্তু কী করবো? দুই বেলা খাবারওতো খেতে হবে।’

দৈনিক ২৭০ টাকা মজুরিতে চুল্লিতে তামাক পাতা পোড়ানোর কাজ করেন শ্রমিকরা। তাদেরই একজন সীমা কর্মকার বলেন, ‘স্বাস্থ্যঝুঁকি জেনেও পেটের দায়ে তামাক চুল্লিতে কাজ করছি। কাজ না করলে সংসার চালাতে পারবো না, দিন দিন সংসারের খরচতো বাড়ছে।’

এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা মধুসূদন দে জাগো নিউজকে বলেন, বিভিন্ন বিদেশি টোব্যাকো কোম্পানি চাষিদের লোভ দেখিয়ে তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ করছে। তুলনামূলক আয় বেশি হওয়ায় চাষিরা তামাক চাষে ঝুঁকছেন।

তিনি বলেন, কৃষকদের সচেতন করে তামাক চাষ থেকে ফিরিয়ে আনতে আমরা চেষ্টা করছি। বিভিন্ন প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় তাদের অন্যান্য ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

Advertisement

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ওমর ফারুক বলেন, যেসব এলাকায় তামাক চাষ হচ্ছে এবং চুল্লিতে তামাক পাতা পোড়ানো হচ্ছে সেখান থেকে নির্গত ধোঁয়া পরিবেশ দূষণ করছে। এতে ছোট-বড় সবার স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। যারা অধূমপায়ী তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সরকারিভাবে উদ্যোগ নিয়ে তামাক চাষে চাষিদের নিরুৎসাহিত করার আহ্বান জানান তিনি।

এসআর/এএসএম