জাতীয়

সাপের কামড়ে দেশে বছরে সাড়ে ৭ হাজার মানুষের মৃত্যু: এনসিডিসি

দেশে প্রতিবছর ৪ লাখ ৩ হাজার ৩১৭ মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হন এবং মৃত্যু হয় প্রায় ৭ হাজার ৫১১ জনের। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনসিডিসি) দেশব্যাপী একটি সর্পদংশন জরিপ করে। এতেই উঠে এসেছে এমন চিত্র।

Advertisement

রোববার (১৮ জুন) সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির প্রাপ্ত ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগ ও সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থার অংশগ্রহণে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সহায়তায় দেশব্যাপী দৈবচয়নের ভিত্তিতে নির্ধারিত ২০০টি পিএসইউ এর ৬২,০০০ খানাতে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর সঙ্গে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পূর্বে চিকিৎসা গ্রহণ করা ৪০০ জন সর্পদংশন রোগীর বর্তমান শারীরিক ও মানসিক অক্ষমতা যাচাই করা হয়।

আরও পড়ুন> সাপের কামড়ে প্রাণ হারালেন তুলা গবেষণা কর্মকর্তা

Advertisement

জরিপে বলা হয়, দেশে প্রতিবছর প্রতি লাখে ২৪৪ জন সাপের কামড়ের শিকার হন এবং প্রায় ৫ জন মানুষ মারা যায়। মোট আক্রান্তের ৯৫ ভাগই হলো গ্রামে। আর এসব সাপের কামড়ের ৪ ভাগের এক ভাগ বিষাক্ত সাপের কামড়ে হয়ে থাকে। যার মাঝে ১০ দশমিক ৬ শতাংশ শারীরিক এবং ১ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়ে থাকে।

সর্পদংশন বেশি ঘটে খুলনা ও বরিশাল বিভাগে। ২৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সী পুরুষরা বাড়ির আশেপাশে সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের ভেতরে সবচেয়ে বেশি সাপের কামড়ের শিকার হন।

জরিপে দেখা যায়, দেশের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ দংশনের পর অঙ্গে গিঁট দেন এবং ৬৫ ভাগ মানুষ প্রথমেই ‘ওঝা’ বা প্রচলিত চিকিৎসকের নিকট চিকিৎসা নেন। সর্পদংশনের পরে প্রতি হাজারে ২ জন মানুষের অঙ্গহানি ঘটে এবং ২ থেকে ২৩ ভাগ মানুষ বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক অসুস্থতা ভোগ করেন। সর্পদংশনের পর শতকরা প্রায় ১০ ভাগ মানুষ দীর্ঘমেয়াদি অবসাদগ্রস্ততায় আক্রান্ত হন।

প্রতিটি সর্পদংশনের কারণে চিকিৎসার জন্য দংশিত ব্যক্তির প্রায় ২ হাজার টাকা ব্যয় হয়।

Advertisement

এই জরিপে আরও জানা গেছে, মানুষ ছাড়া অন্যান্য প্রাণীরাও সাপের কামড়ের শিকার হচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। প্রতিবছর প্রায় ১৯ হাজার গৃহপালিত পশু সর্পদংশনে আক্রান্ত হয় এবং এর মধ্যে আড়াই হাজার গৃহপালিত পশু মারা যায়। ফলে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়।

এএএম/এসএনআর/এমএস