অর্থনীতি

দালাল শ্রেণি তৈরি করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড: রাশেদা কে চৌধুরী

নতুন আয়কর আইনে এনজিওকে কোম্পানি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোম্পানি করের আওতায় আনার সমালোচনা করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দালাল শ্রেণি তৈরি করছে।

Advertisement

রোববার (১৮ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট আলোচনায় তিনি আরও বলেন, কোম্পানি কী করে নট ফর প্রফিট প্রতিষ্ঠানে ঢুকে গেলো তা বুঝতে পারছি না।

রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, খাতা কিনতে হয় শিক্ষার্থীদের। সেখানে কলমের ওপর আমরা ট্যাক্স বসিয়ে দিয়েছি। সোশ্যাল সেফটি নেট প্রোগ্রামগুলোর বরাদ্দ ১০.৮ শতাংশ কমেছে। বুঝলাম সেখানে আইএমএফের একটা ইনস্ট্রাকশন ছিল।

আরও পড়ুন> সরকার বাজেট বাস্তবায়ন করতে সক্ষম: প্রধানমন্ত্রী

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘দালালের দৌরাত্ম্যে হাসপাতালে ঢুকতে পারে না সাধারণ মানুষ। সেই দৌরাত্ম্য বার্থ রেজিস্ট্রেশন (জন্মনিবন্ধন) থেকে সব জায়গায়। এটা তো জনপ্রতিনিধিদের জানার কথা। তাহলে এনবিআর কী করে ব্রোকার ক্লাস তৈরি করে।’

প্রস্তাবিত আয়কর আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবাক বিস্ময়ে, হতভম্ব হয়ে লক্ষ্য করলাম কোম্পানি অ্যাক্ট বিশাল বিশাল পরিবর্তন তারা নিয়ে আসলো। সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এনজিও, সমিতি, নট ফর প্রফিট সবকিছুই ঢুকে গেছে। প্রতিটি আইনে তো একটা স্পিরিট থাকে। কোম্পানি অ্যাক্টে কী করে নট ফর প্রফিট কোম্পানিতে ঢুকে গেলো। আজ সেটা সংসদে তোলা হচ্ছে। এটা কী করে হলো, কার মাথা থেকে এসেছে জানি না, কী লাভ হবে?

তিনি বলেন, ভিকারুননিসা স্কুল সেটা দিতে পারবে। গ্রামের একটা স্কুল তো দিতে পারবে না। তাকে যদি কোম্পানি আইনের অধীনে ঢোকাই দেন তাহলে সে কী করে করপোরেট ট্যাক্স দেবে। যদি কোনো ইনকাম না থাকে তাও ০.৬ শতাংশ দিতে হবে। এটা কী জন্য আসলো। আমরা বুঝতে পারছি না। শিক্ষাবান্ধব সরকার বলা হচ্ছে, তবে এটা কোনদিক থেকে শিক্ষাবান্ধব হল বুঝতে পারছি না।

তিনি বলেন, এই ট্যাক্সবেজ বাড়াতে আর কি কোনো উপায় ছিল না। নট ফর প্রফিটের কাছ থেকে যদি ০.৬ নেওয়া হয় নেট রিসিটের ওপর তাহলে ৪০-৪৫ কোটি টাকা বাড়বে। হাজার হাজার কোটি টাকা আমরা ধরতে পারি না আর এই ৪০-৪৫ কোটি টাকা নেবো ট্যাক্সবেজ বাড়ানোর নামে। ঠিক আছে, সরকারের কাছে একটা অনুরোধ আমরা অনুদান এনজিওরা এখন সরকারের কাছ থেকে অনুদান নেবো। সেটা সরকার বাজেটে ব্যবস্থা করবে।

Advertisement

আরও পড়ুন> আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে বাজেট করিনি: অর্থমন্ত্রী

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচনী বছরে এমন একটা পদক্ষেপ হতে পারে না। এটা কোনো রাজনীতির মধ্যেই পড়ে না। আমরা বিশ্বাস করি- আলোচনার সুযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন এটা একটা অবৈজ্ঞানিক, অরাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক পদক্ষেপ। যেটার সঙ্গে দেশের এসডিজি বাস্তবায়ন, এফডিসির উত্তরণ যে কোনো লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাংঘর্ষিক।

এসময় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এটা ড্রাফট। আলোচনার সুযোগ রয়েছে।

এসএম/এসএনআর/এমএস