দেশজুড়ে

খুলনায় বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম, সবজি বাজারে স্বস্তি

পেঁয়াজের দাম সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনতে আমদানি করা হচ্ছে। প্রতিদিনই বেনাপোল ও ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে আসছে পেঁয়াজ। তবে এতেও কমেনি দেশি পেঁয়াজের দাম।

Advertisement

প্রায় তিন মাস পর আমদানি করা হয় পেঁয়াজ। ১০-১২ টাকা দরে আমদানি করা সেই পেঁয়াজ খুলনার বাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকায়। অন্যদিকে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।

তবে কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন সবজির বাজারের ক্রেতারা। কিন্তু চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ।

খুলনার মিস্ত্রিপাড়া বাজার, চানমারী বাজার, রূপসা বাজার ও ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পেঁয়াজের দাম বাড়ায় চলতি মাসের শুরুতে ভারত থেকে আমদানি করা হয়। আমদানির আগে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কেজি। আমদানির পর সেই পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয় ৬৫ টাকায়। কিন্তু হঠাৎ করেই আবারও বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম। ৬৫ টাকার পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: তিনদিনেও বাজারে আসেনি কম দামের সয়াবিন তেল

জোড়াকল বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. আব্দুল্লাহ বলেন, আমদানি করার পর পেঁয়াজের দাম কমে যায় বাজারে। দেশী পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয় ৬৫ টাকায়। একটু খারাপ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। সেই খারাপ পেঁয়াজ আজ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০ টাকায়।

এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, আমদানি করা পেঁয়াজ অনেকেই নিতে চাইছেন না। যারাই বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসছেন তারাই দেশি পেঁয়াজ কিনছেন। ফলে আবারও বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম।

এই দোকানে পেঁয়াজ কিনতে আসা গৃহবধূ আশালতা রায় বলেন, আমদানি করা পেঁয়াজের মান তেমন ভালো না। তাই দেশি পেঁয়াজ নিয়েছি। আমাদের দেশের পেঁয়াজ পরিমাণে কম ব্যবহার করলেও তাতে কাজ হয়। ফলে কম পেঁয়াজ খাওয়ার চেষ্টা করছি।

Advertisement

এদিকে, অনাবৃষ্টি আর দাবদাহের কারণে খুলনার বাজারগুলোতে গত কয়েক সপ্তাহ সবজির দাম বাড়তি থাকলেও এখন একটু কমেছে।

আরও পড়ুন: চিনি-পেঁয়াজে অস্থিরতা কাটেনি

নগরীর ময়লপোতা সন্ধ্যা বাজারের সবজি বিক্রেতা রিপন তরফদার বলেন, গত সপ্তাহে বাজারে বেগুন বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা দরে। আজ বিক্রি হয়েছে ৪০-৫০ টাকায়। ৬০ টাকার কাঁকরোল এখন ৫০ টাকা, করলা ২০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা, ঝিঙে ১০ টাকা কমে ৫০ টাকা, কুশি ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, এছাড়া পেঁপে ১০ টাকা কমে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, কচু ৮০ টাকা, কচুর মুখি ১০০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজি।

জোড়াকল বাজারে ব্যবসায়ী রবিউল ও রানা বলেন, বাজারে সবজির আমদানি কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে বৃষ্টির পরেই সবজি বেশি আসতে থাকায় দামও একটু কমেছে।

বাজারে সবজির দাম কমলেও মাছের দাম রয়েছে আগের মতই। ৪৮০ টাকা-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে নানা সাইজের চিংড়ি। এছাড়া রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৪৫০ টাকা, দেশি মাগুর ও সিং মাছ ৬০০-৮০০ টাকা, কৈ মাছ ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, পাঙ্গাস ১৮০-২৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ টাকা, কার্প জাতীয় মাছ ২০০-৩০০ টাকা, পারশে মাছ ৫০০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম হোসেন বলেন, পেঁয়াজ আমদানির পর দেশি পেঁয়াজের দামও কমে যায়। কিন্তু এখন খবর আসছে দেশি পেঁয়াজের দাম আবার বাড়ছে। করণ জানতে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। ব্যবসায়ীরা যদি উপযুক্ত কারণ না দেখাতে পারেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু পেঁয়াজই নয়, সামনে ঈদ, তাই অন্যান্য পণ্যের বিষয়েও নিয়মিত খোঁজ রাখা হচ্ছে।

আলমগীর হান্নান/জেএস/এমএস