জাতীয়

দুই সন্তান হত্যা : অনুশোচনা নেই মা মাহফুজার

রাজধানীর রামপুরার বনশ্রীতে দুই সন্তান হত্যার পরও মা মাহফুজার মধ্যে কোনো ধরনের অনুশোচনা নেই বলে জানিয়েছেন মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম। রোববার দুপুরে পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে অনানুষ্ঠানিক এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি। তিনি বলেন, “ওই নারীর সন্তান হত্যায় কোনো ধরনের অনুশোচনা নেই। বরং দুই সন্তান হত্যাকে কাঁধ থেকে বোঝা নেমে গেছে বলে উল্লেখ করেছেন। মনিরুল ইসলাম বলেন, “ওই নারী সুস্থ তবে মানসিক জটিলতা রয়েছে। জটিল মনসতাত্ত্বিক সমস্যার কারণে আকস্মিকভাবে নিজ সন্তানদের হত্যা করছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এখনো অন্য কোনো ক্লু তদন্তে উদঘাটিত হয়নি। তিনি বলেন, “আদালতে ওই নারীর দেয়া জবানবন্দি মামলার এভিডেন্স হিসেবে ধরা হচ্ছে। কিন্তু তা একমাত্র এভিডেন্স নয়। আরো কারণ বের করতে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। একাধিক সাইকোলজিস্ট ও সাইক্রিয়াটিস্টের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ধরণের ঘটনা সচরাচর ঘটে না। তবে বিরল নয়। উদাহরণ টেনে মনিরুল ইসলাম বলেন, আমেরিকায় এক নারী তার পাঁচ সন্তানকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার পর পুলিশকে খবর দেয়া হয়। এরপর অবশ্য তিনি হত্যার বিষয়ে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছিলেন। তিনি বলেন, অন্যের সন্তানদের পড়া মুখস্ত হয়ে গেছে এবং নির্ভুলভাবে সব লিখতে পারছে তা দেখে মাহফুজা নিজের সন্তানদের নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে যেতেন। ভাবতেন সন্তানদের ভবিষ্যতে নিয়ে। এজন্য সারা রাত ঘুম হতো না মাহফুজার। মাহফুজা মানসিকভাবে সুস্থ না অসুস্থ সে সম্পর্কে জানতে আদালতের অনুমতি নিয়ে সাইক্রিয়াটিস্ট বা সাইকোলস্টিস্টের দিয়ে নির্ধারণের চেষ্টা করা হবে বলেও জানান মনিরুল ইসলাম। উল্লেখ্য, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর রামপুরা থানাধীন বনশ্রীর বি ব্লকের ৪ নম্বর সড়কের ৯ নম্বর সাততলা বাড়ির চতুর্থ তলা থেকে ইশরাত জাহান অরণী (১৪) ও তার সহোদর ভাই আলভী আমানকে (৬) অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত পৌনে আটটার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সহোদরদের মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের মধ্যে অরণী বেইলী রোডে অবস্থিত ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। আর আলভী বনশ্রীতে অবস্থিত হলি ক্রিসেন্ট স্কুলের নার্সারির ছাত্র ছিল। ঘটনার পর পিতামাতাসহ পরিবারের অনেকেই খাদ্যে বিষক্রিয়ায় তাদের দুই সন্তানের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে আসছিলেন। এই ঘটনায় শিশুদের দাফন শেষে বাবা আমানুল্লাহ ও মা মাহফুজা মালেক জেসমিনকে র্যাব সদর দফতরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মাহফুজা সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করেন। র্যাব ও থানা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এবং গোয়েন্দা পুলিশের দুই দফা রিমান্ডে একই ধরনের তথ্য দেন মাহফুজা। জেইউ/এসকেডি/এবিএস

Advertisement