কৃষি ও প্রকৃতি

বাঁশের তৈরি পণ্য বিক্রি করেই চলে তাদের সংসার

পার্বত্য খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা পৌর শহরের কাজীপাড়ার বিধবা অজিফা খাতুন, শাহেনা আক্তার আর পলাশপুরের আমেনা বেগম। বাঁশের ঝুড়ি বা খাঁচা তৈরি করে চলে তাদের সংসার। একসময় কাজীপাড়া, গাজিনগর, শান্তিপুর ও পলাশপুরে ঘরে ঘরে বাঁশের ঝুড়ি, কুলা, ডালা বা খাঁচা তৈরি হতো। বাঁশের মূল্য বৃদ্ধি ও প্ল্যাস্টিক পণ্যের বাজার দখলের কারণে অনেকেই পেশা বদল করেছেন। কিন্তু কাজীপাড়ার বিধবা অজিফা খাতুন, আমেনা বেগম আর শাহেনা আক্তার বাঁশের ঝুড়ি, কুলা, ডালা বা খাঁচাসহ বাঁশ ও বেতের গৃহসামগ্রী বিক্রি করেই সংসারের ঘানি টানছেন।

Advertisement

কাজীপাড়ায় বিধবা অজিফা খাতুনের বাড়িতে গেলে বাঁশের ঝুড়ি ও কুলা তৈরি করতে দেখা যায়। সেখানেই কথা হলে এ নারী জানান, গত বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাঁশের ঝুড়ি, কুলা, ডালা, খাঁচাসহ বাঁশ ও বেতের গৃহসামগ্রী তৈরি করছেন। এসব বিক্রি করেই তার সংসার চলে। মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেও বিয়ের পরে আলাদা হয়ে গেছেন।

আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় বাণিজ্যিকভাবে তিতির পালনে সফল শুভারণ 

বাঁশ ও বেতের কাজ করা পলাশপুরের নারী আমেনা বেগম জানান, এখন আর আগের মতো বাঁশ পাওয়া যায় না, দামও খুব বেশি। সরকারি সাহায্য দাবি করে এ নারী বলেন, ‘অনেক কিছুরই বদল হয়েছে কিন্তু আমাদের মতো অভাবীদের ভাগ্যের বদল হয়নি। তবে এ কাজে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দাবি করছি।’

Advertisement

পারুল বেগম বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে ঘরের কাজ শেষ করে শুরু করি খাঁচা-ওড়া-ডালা তৈরির কাজ। কখনো কখনো রিকশাচালক স্বামী আর কলেজ পড়ুয়া মেয়েও বাঁশের বেত তুলে দিতে সাহায্য করেন। বাঁশের খাঁচা-ওড়া-ডালা বিক্রি আর স্বামীর উপার্জনে চলে সন্তানদের লেখাপড়া আর সংসারের খরচ।’

আরও পড়ুন: সাড়া ফেলেছে পুতুল রানীর কেঁচো সার 

পাঁচ বছর ধরে বাঁশের খাঁচা তৈরি করা আব্বাস সর্দারপাড়ার মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘এক জোড়া খাঁচা তৈরি করতে একদিনের মতো সময় লাগে। প্রতিটি খাঁচা ১২০-১৫০ টাকা বিক্রি হয়। সপ্তাহজুড়ে খাঁচা তৈরির পর শনিবার ২০ কিলোমিটার দূরের মাটিরাঙ্গা বা শান্তিপুর বাজারে বিক্রি করা হয়। ফলের মৌসুমে বাঁশের খাঁচার চাহিদা বেশি। অনেকে বাড়ি থেকেও খাঁচা সংগ্রহ করেন।’

মাটিরাঙ্গা উপজেলার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল হক বলেন, ‘যারা বাঁশের খাঁচা বানিয়ে জীবিকা চালান; তারা সমিতি করে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। সমিতি করলে নিয়মানুযায়ী নিবন্ধনের বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে। নিবন্ধন হলে প্রতিবছর আর্থিক অনুদান পাওয়ার সুযোগ থাকবে।’

Advertisement

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এসইউ/জিকেএস