সুইজারল্যান্ডের পার্লামেন্টে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ভাষণ দিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে এদিন পার্লামেন্টের একাংশ খালি রেখেই বক্তব্য দিতে হয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে। কারণ, তার ভাষণ বয়কট করেছেন সুইস পার্লামেন্টের বৃহত্তম দলের এমপিরা।
Advertisement
জানা যায়, সুইস পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে সুইজারল্যান্ডের অস্ত্র রপ্তানি আইন সংশোধন এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে আরও সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানান জেলেনস্কি।
তিনি বলেন, আমি জানি, ইউক্রেনকে রক্ষা ও প্রতিরক্ষার জন্য যুদ্ধসামগ্রী রপ্তানির বিষয়ে সুইজারল্যান্ডে আলোচনা চলছে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। আমাদের অস্ত্র দরকার, যেন আমরা ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারি।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের এই ভাষণ বয়কট করেছে সুইজারল্যান্ডের ডানপন্থি রাজনৈতিক দল পিপলস পার্টি। সুইস পার্লামেন্টে নিম্নকক্ষের (ন্যাশনাল কাউন্সিল) ২০০ আসনের মধ্যে ৫৩টি এবং উচ্চকক্ষে (কাউন্সিল অব স্টেটস) ৪৬ আসনের মধ্যে ছয়টির দখল রয়েছে এই দলটির।
Advertisement
অবশ্য, সুইস পার্লামেন্টে জেলেনস্কির ভাষণ দেওয়ার খবর গত মাসে প্রকাশ্যে আসার পরপরই পিপলস পার্টি জানিয়ে দিয়েছিল, তারা এই ভাষণ বয়কট করবে। দলটির মতে, এটি সুইজারল্যান্ডের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মারাত্মক হস্তক্ষেপের শামিল।
পিপলস পার্টির এমপি আলফ্রেড হিয়ার বলেছিলেন, আমরা বুঝি, ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনকে রক্ষার জন্য সব কিছু করতে চান। কিন্তু আমাদের নিষেধাজ্ঞা বা অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে নিজেদের চাপে পড়তে দেওয়া উচিত হবে না।
সুইস পার্লামেন্টে কোনো বিদেশি অতিথির ভাষণ দেওয়া বেশ বিরল ঘটনা। ১৯৭০’র দশক থেকে এমন ঘটনা ২৪ বার ঘটলেও জেলেনস্কিই হলেন প্রথম বিদেশি নেতা, যিনি ভিডিও লিংকের মাধ্যমে বক্তব্য রাখলেন।
পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে সুইজারল্যান্ড বরাবরই নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করে। তবে পশ্চিমা নেতৃত্বে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেন-সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞায় যোগদানের সিদ্ধান্তের কারণে বার্নের সেই দীর্ঘস্থায়ী ভাবমূর্তি কিছুটা ক্ষুণ্ন হয়েছে। যদিও দেশটি যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর চাপ সত্ত্বেও ইউক্রেনে সুইস অস্ত্র পুনঃরপ্তানির অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।
Advertisement
চলতি মাসের শুরুর দিকে জাতীয় যুদ্ধ সামগ্রী আইনের সংশোধনী সম্পর্কিত একটি বিল প্রত্যাখ্যান করেছে সুইজারল্যান্ডের ন্যাশনাল কাউন্সিল। ‘লেক্স ইউক্রেন’ নামে পরিচিত ওই বিলে ২০২৫ সালের শেষ পর্যন্ত একটি অস্থায়ী ছাড়ের আহ্বান জানানো হয়েছিল, যাতে কিয়েভের কাছে সুইস-নির্মিত যুদ্ধ সামগ্রী হস্তান্তরের অনুমতি দেওয়া যায়।
সূত্র: আরটি, হিন্দুস্তান টাইমসকেএএ/