মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছেলের পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন মা। উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের ভানুবিল গ্রামের ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হয়।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ওই অভিযোগ দায়ের করেন একই গ্রামের ছমেদ মিয়ার মেয়ে হামিদা বেগম।
গ্রাম আদালতে দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভানুবিল গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ একই গ্রামের ছমেদ মিয়ার মেয়ে হামিদা বেগমকে বাড়িতে এসে প্রাইভেট (টিউশন) পড়াতেন। এক পর্যায়ে হামিদা বেগমের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন হারুন অর রশিদ। পরবর্তীতে হামিদা বেগমের ঘরে একটি ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করে। এতে তার পরিবারের সদস্যরা প্রতিবাদ করলে হামিদা বেগমকে বিয়ে করবেন না বলে জানিয়ে দেন হারুন অর রশিদ।
পরে এ বিষয়ে মৌলভীবাজার আদালতে একটি মামলা দেওয়া হয়। মামলার রায়ে হামিদার মানহানি বাবদ ৫০ হাজার টাকা ও ছেলের বয়স ১২ বছর পর্যন্ত মায়ের কাছে অবস্থান করবে বলে জানানো হয়। সাবালক হয়ে ছেলেটি বাবার কাছে থাকবে এবং তার ব্যয়ভার তিনি বহন করবেন। এখন ছেলের ১৮ বছর পূর্ণ হলেও কোনো খরচ বহন করছেন না এবং ছেলেটি তার নয় বলে দাবি করছেন হারুন অর রশিদ।
Advertisement
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ওই ছেলের জন্মসনদ ও স্কুল সার্টিফিকেটে দেখা যায় তার বাবার নাম হারুন মিয়া ও মায়ের নাম হামিদা বেগম। ছেলের ১৮ মাস বয়স থাকা অবস্থায় মায়ের অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে যায়। ছেলেকে লালন পালন করেন খালা ও তার নানি।
পিতৃ পরিচয়হীন ছেলেটি বলেন, আমি খুব কষ্টে বড় হয়েছি খালা ও নানির কাছে। নানি ও খালা বর্তমানে অক্ষম। আমি মানুষের কাজ করে নিজের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছি। এ বছর আমি এইচএসসি পরীক্ষা দেবো। এমন সময় আর কাজ করা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আমি ছোট থাকা অবস্থায় মাকে অন্য একটা জায়গায় বিয়ে দেন নানি। কিন্তু আমার বাবা আছেন। বাবার কাছে গেলে আমাকে তাড়িয়ে দেন। তিনি আমার বাবা নন বলে জানান। আমি আমার বাবার পরিচয় ও আমার অধিকার পেতে চাই।
এ বিষয়ে গ্রাম আদালতে অভিযোগকারী হামিদা বেগম বলে, আমার ছেলের পিতৃ পরিচয় ও তার যাবতীয় ভরণপোষণের খরচ বহন করার জন্য আমি ৭নং আদমপুর ইউনিয়নের গ্রাম আদালতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদের ফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।
Advertisement
আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদাল হোসেন জানান, আমার ইউনিয়নের গ্রাম আদালতে একটা লিখিত অভিযোগ এসেছে। তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আব্দুল আজিজ/এফএ/এএসএম