দেশজুড়ে

কার্গো বিমান বিধ্বস্ত : মরদেহ হস্তান্তরে সিদ্ধান্তহীনতায় প্রশাসন

কক্সবাজার বঙ্গোপসাগরের নাজিরাটেক পয়েন্টে কার্গো বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পাইটলসহ নিহত তিন বিদেশীর মরদেহ হস্তান্তরে এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে প্রশাসন। নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টার কথা জানালেও ঘটনার চার দিনেও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি প্রশাসন।কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, নিহতের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। এখনো পর্যন্ত নিহতের স্বজনদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। ঘটনা অবহিত এবং মরদেহ হস্তান্তরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত পেলে নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।প্রশাসন ও পুলিশ সূত্র জানায়, এক বছর মেয়াদের ভিসায় ট্রু এভিয়েশনে চাকরি নিয়ে এ ৪ বিদেশী বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন। গত ১৬ জানুয়ারি নিহত ৩ জনের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। বিদেশী নাগরিক আইন অনুযায়ী তারা বাংলাদেশে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন।এ নিয়ে মরদেহ হস্তান্তরে কোনো জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. আসলাম হোসেন বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও তিনি জানান, বিমান বিধ্বস্তে ৩ বিদেশী নাগরিক নিহতের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। নিহত এ ৩ বিদেশীদের মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।এ বিষয়ে কক্সবাজার আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, জীবিত অবস্থায় কোনো ব্যক্তি অপরাধ করে থাকলে মৃত্যুর পর আইনি বিচারের আওতায় থাকেন না। নিহত ৩ বিদেশী নাগরিকের মৃতদেহ হস্তান্তর নিয়ে আইনগত বড় কোনো জটিলতা নেই। বিষয়টি দু’দেশের দূতাবাসের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে। তবে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও চাকরিতে বহাল রেখে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থানের সুযোগ দিয়েছিল বিধ্বস্ত বিমানটির পরিচালনা সংস্থা ট্রু এভিয়েশন।এ ব্যাপারে কথা বলতে বিমানটির পরিচালনা সংস্থা ট্রু এভিয়েশন কক্সবাজার এরিয়া কার্যালয়ের ম্যানেজার হাসমত জাহানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। রিসিভের পর অপরপ্রান্ত থেকে পরিচয় জানতে চেয়ে সাংবাদিক পরিচয় পাবার পর তিনি হাসমত নন উল্লেখ করে লাইনটি কেটে দেন। পরে তার মোবাইল নম্বর দেয়া সূত্রটির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পরিচয় গোপন করে সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন হাসমত।উল্লেখ্য, ৯ মার্চ সকাল সাড়ে ৯ টায় কার্গো বিমানটি কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পর বঙ্গোপসাগরের নাজিরাটেক পয়েন্টে বিধ্বস্ত হয়। এতে পাইলট সহ তিন বিদেশি নিহত হন। আহত হন আরও এক বিদেশি। কার্গো বিমানটি চিংড়ি পোনা নিয়ে কক্সবাজার থেকে যশোর যাচ্ছিল।নিহত ৩ বিদেশী নাগরিক বিমানটির পাইলট মুরাদ কাপারত, ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার কুলিশ আন্দ্রে ও কো-পাইলট ইভান ডেমান এর মরদেহ ময়নাতদন্তের পর কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গের হিমাগারে রাখা হয়েছে। তাদের মৃতদেহ হস্তান্তর নিয়ে ঘটনার চার দিন পরও স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ না হওয়া এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। আহত হয়ে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন কো-পাইলট ডলোডারমান।সায়ীদ আলমগীর/এফএ/পিআর

Advertisement