শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে কতজনই না কতকিছু করেন। কেউ হয়তো সারাদিন না খেয়ে থাকেন, আবার কেউ ক্যালোরি মেপে খান, কেউ আবার করেন ইন্টারমিটিং ফাস্টিং। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওজন কমানোর সেরা উপায় হতে পারে ইন্টারমিটিং, ড্রাই ফাস্টিং কিংবা ওয়াটার ফাস্টিং।
Advertisement
তবে জানলে আরও উপকৃত হবেন যে, যারা ড্রাই ফাস্টিং করতে পারেন না তারা চাইলে পানি পান করে অর্থাৎ ওয়াটার ফাস্টিং করেও অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে পারেন।
আরও পড়ুন: ৩২ কেজি ওজন কমিয়ে যেভাবে ফিট হলেন ভূমি
ওয়াটার ফাস্টিং আসলে কী?
Advertisement
এক্ষেত্রে সারাদিন আপনি পানি ছাড়া আর কোনো কিছুই খেতে পারবেন না। এক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পানি পান করেই পেট ভরাতে হবে। এতে শরীর থেকে টক্সিন পদার্থগুলো বেরিয়ে যায়।
যেহেতু ওয়াটার ফাস্টিং চলাকালীন শরীরে কোনো ক্যালোরি ঢোকে না তাই শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বেরিয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়াটার ফাস্টিং এর সময় চাইলে অর্গ্যানিক কালো কফি, গ্রিন টি’সহ ডিটক্স ওয়াটার পান করা যাবে।
সপ্তাহে ২-৩দিন এর বেশি ওয়াটার ফাস্টিং না করাই ভালো। দ্রুত ওজন কমাতে ওয়াটার ফাস্টিংয়ের পাশাপাশি সপ্তাহের অন্যান্য দিন ড্রাই ফাস্টিং করতে পারেন।
আরও পড়ুন: থাইরয়েড রোগীরা ওজন কমাতে যা খাবেন যা খাবেন না
Advertisement
তবে পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া এ ধরনের ফাস্টিং না করাই ভালো। আর হুটহাট করে ওয়াটার ফাস্টিং করলেও চলবে না। ফাস্টিং করার অন্তত সপ্তাহখানেক আগ থেকে ক্ষুধা কমানোর জন্য পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে ও ভাজাপোড়া ও মিষ্টি খাবার ত্যাগ করতে হবে।
এ সময় অলিভ অয়েল, খাঁটি নারকেল তেল, সরিষার তেলসহ বাটার, ঘি, বাদাম, ডিম, শাকসবজি ও মাছ-মাংস ইত্যাদি প্রতি বেলার খাবারে রাখুন। তাহলে আপনার ফ্যাট অ্যাডাপটেশন দ্রুত হবে অর্থাৎ ক্ষুধা কমে যাবে।
এরপর থেকে ওয়াটার ফাস্টিং ও নিয়ম করে ড্রাই ফাস্টিং করে দিনে একবেলা অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় একবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। দেখবেন আপনি দ্রুত ও স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমাতে সক্ষম হবেন।
আরও পড়ুন: ঘুমিয়ে ওজন কমানোর ৫ উপায়
ধীরে ধীরে ২৪-৭২ ঘণ্টা পর্যন্তও করতে পারেন ওয়াটার ফাস্টিং। এক্ষেত্রে দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে। ওয়াটার ফাস্টিং চলাকালীন খুব বেশি পরিশ্রম করা যাবে না।
ওয়াটার ফাস্টিংয় করলে আরও যেসব উপকার মেলে-
>> শরীরে অতিরিক্ত টক্সিন জমা হলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোর কার্যকারিতা কমে যায়। পানি পান করে ফাস্টিং করলে শরীর থেকে টক্সিন বেরিয়ে যায়।
>> শরীরের কোষগুলির উপর ইনসুলিনের প্রভাব বেড়ে যায়। ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে এই উপবাস করার আগে ডায়াবেটিসের রোগীরা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।
আরও পড়ুন: ওজন কমাতে গিয়ে যেসব রোগ ডেকে আনছেন!
>> শরীরে লেবটিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। এই হরমোন ক্ষুধার অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে ওয়াটার ফাস্টিংয়ে ক্ষুধা কমে ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ইচ্ছেও কমে যাবে।
>> বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
>> পানি পান করলে শরীর কিটোসিস পর্যায় চলে যায়। কিটোসিস পর্যায়ে স্নায়ুর কার্যকারিতা বেড়ে যায়। ফলে মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।
সূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে/হেলথলাইন
জেএমএস/এমএস