রাজনীতি

‘হাতপাখা মূলত বিএনপি-জামায়াতের ভোট পাচ্ছে’

আওয়ামী লীগের জন্য নির্বাচনী মাঠ প্রায় ফাঁকা। গত এক দশক বিরোধীদলগুলোর নির্বাচন বয়কট আর বর্জনের মধ্য দিয়ে ভোটের ফসল একতরফাভাবে ঘরে তুলছে ক্ষমতাসীন দলটি। জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে স্থানীয় নির্বাচনেও একছত্র আধিপত্য লক্ষ্য করা যায় নৌকা প্রতীকের।

Advertisement

সম্প্রতি গাজীপুর সিটিতে বড় ধাক্কা খেলেও অন্য সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে নৌকার জয় জয়কার। বিএনপি-জামায়াত অংশ নিচ্ছে না এসব নির্বাচনে। অংশ নিচ্ছে না সরকারবিরোধী অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও।

এ সুবাদেই নিজেদের সক্ষমতা জানান দিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে টক্কর দিতে মাঠে নেমেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (চরমোনাই)। নিজেদের ভোটের বাইরেও আওয়ামীবিরোধী শিবিরে ভর করে বিশেষ শক্তিমত্তার পরিচয় দিতে চাইছে ইসলামপন্থি দলটি। পরাজিত হলেও সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনেই বিগত বছরের চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে হাতপাখা।

আরও পড়ুন>> খুলনা সিটি নির্বাচন/কার ভোট কমলো কার বাড়লো

Advertisement

এসব নির্বাচনে নৌকার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হাতপাখা হয়ে ওঠাকে আওয়ামী লীগ কীভাবে দেখছে? আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য প্রবীণ রাজনীতিক আমির হোসেন আমু বলেন, ‘হাতপাখা মূলত বিএনপি-জামায়াতের ভোট পাচ্ছে। চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।’

এবারে গাজীপর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীকে গাজী আতাউর রহমান ৪৫ হাজার ৩৫২ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থান লাভ করেন। বরিশালে ৩৩ হাজার ৩০৭ ভোট এবং খুলনায় ৬০ হাজার ৬৪ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা। দলটির রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন>> গাজীপুরের নির্বাচন থেকে অনেক কিছুর বার্তা মিলেছে

আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা কঠোর পরিশ্রম করছেন। তারা ধর্মের নাম নিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। আবার প্রধান বিরোধীদলগুলো ভোটে অংশ নেয়নি। এই তিন কারণে হাতপাখার ভোট বাড়ছে বলে মনে করি। তবে এতে বিচলিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। মানুষ নৌকার পক্ষেই আছে।’

Advertisement

তাদের এই ভোটের হার মূলধারার দলগুলোকে চ্যালেঞ্জে ফেলছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বাঙালি ধার্মিক। কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। মানুষ ধর্মীয় রাজনীতি গ্রহণ করলে বহু আগেই জামায়াতকে ক্ষমতায় দেখা যেত। মানুষ এদের প্রত্যাখ্যান করেছে। ধর্মের সঙ্গে রাজনীতিকে আসলে দেখতে চায় না। এ কারণে ইসলামী আন্দোলন কোনো চ্যালেঞ্জ নয় আমাদের কাছে।’

এই প্রবীণ নেতা আরও বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ যদি বাড়ে তাহলে সেটা বিএনপি-জামায়াতের জন্য। তারা বারবার ভোট বর্জন করে অনুসারীদের হতাশ করছেন। ভোটাররা তো বসে থাকবে না। নৌকার বিপরীতের ভোটাররা হাতপাখায় ভোট দিচ্ছে। এত ভোট হাতপাখার কখনই হতে পারে না। ভাসমান ভোটও কিছু পাচ্ছে তারা। এর দায় তো বিএনপির। এভাবে চলতে থাকলে বিএনপি নিঃশেষ হয়ে যাবে। হয়তো অন্য কেউ জায়গা করে নেবে। জায়গা কখনই ফাঁকা থাকে না।’

এএসএস/এএসএ/এমএস