ঢাকার কেরানীগঞ্জে কোনাখোলা এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ওই নারীকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মো. শহীদুল ইসলাম (৩৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Advertisement
পুলিশ বলছে, নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে ওই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে শহীদুল। কিন্তু হঠাৎ ওই নারী বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাকে কেরানীগঞ্জ নিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর পুরান ঢাকার জনসন রোডে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।
আসাদুজ্জামান জানান, গত ১১ জুন রাতে জাতীয় জরুরি কল ৯৯৯ এর কলে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর গলায় ওড়না পেঁচানো মরদেহ উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মিটফোর্ড) মর্গে পাঠায় কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। পরে সিআইডির ক্রাইম সিনের সহায়তায় নারীর পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তিনি খুলনা সদরের বাসিন্দা। পরে পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়। পাশাপাশি ঘটনাস্থলের বিভিন্ন আলামত ও তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তদন্তের একপর্যায়ে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যায় জড়িত ব্যক্তির সন্ধান পায় পুলিশ। এরপর সোমবার (১২ জুন) মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মাসদাইর এলাকা থেকে শহীদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
Advertisement
গ্রেফতারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ওই নারীর সঙ্গে শহীদুলের সাত থেকে আট বছর ধরে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। হত্যার একদিন আগে ওই নারীকে খুলনা থেকে বরিশালের হিজলা গ্রামের বাড়িতে যায় শহীদুল। সেখানে গিয়ে ওই নারী জানতে পারেন শহীদুল বিবাহিত এবং তার স্ত্রী বরিশালে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। এ তথ্য জানার পর ওই নারী তাৎক্ষণিকভাবে শহীদুলকে ফোন করে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। পরে শহীদুল ওই নারীকে কৌশলে ঢাকায় আসতে বলেন। ঢাকায় আসার পর ১১ জুন বিকেল ৫টার দিকে তার সঙ্গে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেখা করেন শহীদুল। পরে রাত ১০টার দিকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে কেরানীগঞ্জের কোনাবাড়ি এলাকায় নিয়ে যায়।
সেখানে শহীদুল জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে প্রথমে তাকে ধর্ষণ করেন। পরে ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করেন। এরপর মরদেহ যাতে শনাক্ত করা না যায় সেজন্য পাশে থাকা ইটের টুকরা দিয়ে মুখ থেঁতলে পালিয়ে যায় শহীদুল।
পুলিশ সুপার আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের পর শহীদুল বার বার তার অবস্থান পরিবর্তন করে আসছিল। গ্রেফতার এড়াতে কয়েকটি স্থান পরিবর্তন করেন। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে কেরানীগঞ্জ থানার একটি দল।
টিটি/এমএএইচ/এমএস
Advertisement