দেশজুড়ে

কার ভোট কমলো কার বাড়লো

অবশেষে হয়ে গেলো খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আবারো মেয়র হলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ তালুকদার আব্দুল খালেক। সোমবার (১৩ জুন) রাত ৯ টায় নগরীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

Advertisement

বিপুল ভোটের ব্যবধানে তালুকদার আব্দুল খালেক মেয়র নির্বাচিত হলেও সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনের চেয়ে এবার ২২ হাজার ৭৭ ভোট কম পেয়েছেন তিনি। এতেই শুরু হয়েছে নানান আলোচনা। অনেকেই বলছেন খুলনায় আওয়ামী লীগের ভোট কমেছে। অন্যদিকে ভোট বেড়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের।

কঠিন কোনো প্রতিপক্ষ না থাকলেও তালুকদার আব্দুল খালেক ভোট কম পাওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়েছেন খুলনার আওয়ামী লীগ নেতারা। ভোট কম পাওয়ার কারণ ক্ষতিয়ে দেখবেন বলেও জানিয়েছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ছিলেন তালুকদার আব্দুল খালেক। কিন্তু সেই নির্বাচনে তার প্রতিপক্ষ ছিলেন বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এরপরও তালুকদার খালেক পেয়েছিলেন ১ লাখ ৭৬ হাজার ৯০২ ভোট। নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে তিনি পরাজিত করেছিলেন ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে।

Advertisement

এবারের মেয়র নির্বাচনে তার চেয়েও বেশি ব্যবধানে তিনি নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের মো. আ. আউয়ালকে হারিয়েছেন। তবে খালেক পেয়েছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮২৫ ভোট।

ভোটাররা বলছেন, এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। আবার সিটি করপোরেশনে ভোটার বেড়েছে ৪০ হাজারের বেশি। সবমিলিয়ে এবার আরও অনেক বেশি ভোট পাওয়ার কথা ছিল তালুকদার খালেকের। নানা কারণে এবার প্রস্তুতিও ছিল আগের সব নির্বাচনের চেয়ে বেশি। কিন্তু ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেলো গতবারের চেয়ে ২২ হাজার ৭৭ ভোট কম পেয়েছেন আব্দুল খালেক।

অপরদিকে গত বারের তুলনায় এবার চার গুণের বেশি ভোট পেয়েছেন হাতপাখার প্রার্থী। যা আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীই আশা করেননি।

মেয়র পদে তালুকদার আব্দুল খালেকের ভোট কম পাওয়ার বিষয়টি সহজভাবে নিতে পারছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

Advertisement

খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডি এ বাবুল রানার কথায় বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, যেকোনো বারের চেয়ে এবার নির্বাচনে প্রস্তুতি ছিল অনেক বেশি। কিন্তু কী কারণে ভোট কম পড়লো তা ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাবুল রানা আরও বলেন, ‘আমাদের আশা ছিল এবার মেয়র প্রার্থী আব্দুল খালেক দুই লাখের বেশি ভোট পাবেন। কিন্তু দেখা গেলো আশার থেকেও তো দূরে থাক, গতবারের ধারে কাছেও তার ভোট যায়নি।’

‘এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে সাংগঠনিকভাবে আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে ওয়ার্ডের প্রাপ্ত ভোটগুলোর ফলাফল আমাদের হাতে এলে তা বিশ্লেষণ করে দেখা হবে কেন ভোট কম পড়েছে।’ যোগ করেন বাবুল।

ফলাফল ঘোষণার পর ভোট কমার বিষয়ে সোমবার রাতে তালুকদার আব্দুল খালেক সাংবাদিকদের বলেন, খুলনার শিল্পাঞ্চলে অনেক মিল-কারখানা বন্ধ। সে কারণে অনেক শ্রমিক খুলনার বাইরে চলে গেছে। ওই ভোটার উপস্থিতি হলে ভোটের পরিমাণ আরও বাড়তো।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মো. আ. আউয়ালের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান শেখ মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, অনেকগুলো কারণে আমাদের ভোট বেড়েছে। এর মধ্যে আমাদের দাওয়াতি কার্যক্রম, অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদ, ইসলামের প্রতি মানুষের অনুরাগ, আর আওয়ামী বিরোধী মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছেন। আশা করি আগামীতে আমাদের ভোট আরও বাড়বে।

এসজে/জিকেএস