দেশজুড়ে

৫ লাখের সরকারি ভবন গোপনে ৮৬ হাজার টাকায় বিক্রি!

বগুড়ার শেরপুরে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের একটি ভবন নামমাত্র মূল্যে নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যথাযথ প্রচার-প্রচারণা না চালিয়ে অনেকটা গোপনে ভবনটি বিক্রি করে দেওয়া হয়। ভবনটি অন্তত ৪-৫ লাখ টাকায় বিক্রি করা যেতো বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এতে মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ভবনটির মেয়াদ উর্ত্তীণ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। সেইসঙ্গে এটি অপসারণ করার জন্য জন্য নিলামে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। নিলাম কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় উপজেলা প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন ও তার দপ্তরকে। কিন্তু যথাযথ প্রচার-প্রচারণা না চালিয়ে সরকারি ওই ভবনটি নিলামে তোলেন লিয়াকত হোসেন।

অভিযোগ রয়েছে, নিলাম বিজ্ঞপ্তিটি পত্রিকায় দেওয়া হয়নি। উপজেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টাঙানো হয়নি কোনো নোটিশ। মাইকযোগেও কোনো প্রচারণা চালানো হয়নি। তাই নিলামের বিষয়টি অনেকেই জানেন না। ৭ জুন দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে মাত্র ৮৬ হাজার ৫০০ টাকায় বগুড়ার মের্সাস বুলবুল ট্রেডার্সের কাছে সরকারি ভবনটি বিক্রি করা হয়।

পুরোনো স্থাপনা ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী সোলায়মান আলী বলেন, ‘সরকারি ভবন নিলামের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। তাই দরপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ পাইনি। পত্রিকায় কোনো বিজ্ঞপ্তিও দেখিনি। জানলে অবশ্যই দরপত্র কিনে জমা দিতাম।’

Advertisement

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রকাশ্যে নিলাম হলে ওই ভবনটি ৪-৫ লাখ টাকায় বিক্রি করা যেতো।’

জানতে চাইলে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী রিপা পারভিন বলেন, ‘নিলামের বিষয়টি কীভাবে করা হয়েছে, সেটি উপজেলা প্রকৌশলী বলতে পারবেন। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।’

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘নিলাম বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় দেওয়ার নিয়ম নেই। তাই এটি করা হয়নি। মাইকযোগে প্রচার-প্রচারণা না হলেও নোটিশ জারির মাধ্যমে সবাইকে জানানো হয়েছে। দরপত্রের যথাযথ নিয়ম মানা হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি একাইতো আর নিলাম দেইনি। ইউএনও স্যার ও জনস্বাস্থ্যের সহকারী প্রকৌশলীও ছিলেন। কমিটির সবার মতামতের ভিত্তিতেই সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে ভবনটি বিক্রি করা হয়।’

Advertisement

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা বলেন, সরকারি ওই ভবনটি নিলামের দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা প্রকৌশলী। তাই প্রচার-প্রচারণা চালানো তারই দায়িত্ব। সেটি যথাযথভাবেই করা হয়েছে বলেই জানি। এক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় ঘটলে অবশ্যই আমার কাছে অভিযোগ আসতো। কিন্তু কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। এরপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

এসআর/এএসএম