দেশজুড়ে

টিকা কার্যক্রমে যুক্ত স্বেচ্ছাসেবকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ঝিনাইদহে করোনাকালীন টিকা কার্যক্রমে অংশ নেওয়া স্বেচ্ছাসেবকদের নামে বরাদ্দ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ২০২১ সালের আগস্ট থেকে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হয়। এসময় জেলার ছয় উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পৌরসভার অধীনে স্বেচ্ছাসেবকরা টিকা দেওয়ার কাজে সহযোগিতা করেন। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবকদের দৈনিক জনপ্রতি ৩৫০ টাকা করে নির্ধারণ করা হয়। পরে ওই বছরের জুলাই থেকে জনপ্রতি ৪০০ টাকা করে নির্ধারণ করে। এসব স্বেচ্ছাসেবকদের টাকার একটি অংশ প্রদান করে বেসরকারি সংস্থা বরাকের একটি প্রকল্প।

Advertisement

সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবকদের এক কিস্তির টাকা আসে। এর মধ্যে জেলার কালীগঞ্জ পৌরসভার অধীনে দায়িত্ব পালন করা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য দুই লাখ ৩১ হাজার টাকা আসে। এসব টাকা কালীগঞ্জ ব্র্যাক অফিস থেকে দেওয়া হয়। গত ৭ জুন বুধবার স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে পৌরসভার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর আলমগীর হোসেন টাকা উত্তোলন করেন। কিন্তু প্রকৃত দায়িত্ব পালন করা স্বেচ্ছাসেবকরা বলছেন টাকা উত্তোলনের বিষয়টি তারা কিছুই জানেন না। স্বেচ্ছাসেবকরা বলছেন, টাকা উত্তোলনের বিষয়টি সত্য হয়ে থাকলে অন্যদের দিয়ে (বডি চেঞ্জ করে) স্বাক্ষর করিয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়ে থাকতে পারে।

আরও পড়ুন: টাকা ছাড়া মেলে না করোনার টিকা 

স্বেচ্ছাসেবকদের গ্রুপ লিডার মোস্তফা ইবনে মাসুদ জানান, কালীগঞ্জ পৌরসভা ও হাসপাতালের অধীনে করোনার টিকা দেওয়ার কাজে দায়িত্ব পালন করেন স্থানীয় প্রায় ৩০ জনের মত একটি স্বেচ্ছাসেবক দল। যে দলের নেতৃত্বে ছিলাম আমি ও ফাইজুল ওয়ারা প্রত্যয়। সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবকদের নামে টাকা উত্তোলন করা হলেও আমি কিছুই জানি না। এমনকি আমার দলে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবকরাও কিছু জানে না।

Advertisement

বিষয়টি জানতে কালীগঞ্জ পৌরসভার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর আলমগীর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ টাকা তোমাদের না। কিছুক্ষণ পরে জানান তোমাদের কত টাকা বাকি আছে প্রমাণ নিয়ে অফিসে দেখা কর।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের টিম লিডার মো. মামুনুর রশিদ জানান, সদর উপজেলা ২০২১ সালের আগস্টের ২৩ তারিখ থেকে টিকা কার্যক্রমে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন। কেন্দ্রে ১৯ জন, ১২ জন আবার ছয় জন করেও কাজ করেছেন। আমরা যারা কাজ করেছি মাত্র ছয় মাসের টাকা পেয়েছি। এখনো ১৬ থেকে ১৭ মাসের টাকা বাকি।

তিনি আরও জানান, তাদের টাকাগুলো সিভিল সার্জন অফিসে আসে। এরপর আমাদের দেওয়া হয়। কালীগঞ্জ ব্যাক অফিসের একাউন্স অফিসার গোলাম ফারুক জানান, ৭ জুন কালীগঞ্জ পৌরসভার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর আলমগীর হোসেন কিছু স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে এসে দুই লাখ ৩৩ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যায়। আমরা তো স্বেচ্ছাসেবকদের চিনি না। কাদের নিয়ে আসা হয়েছে তা তো বলতে পারবো না।

কালীগঞ্জ পৌরসভার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর আলমগীর হোসেন টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করে জানান, স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে টাকা তোলা হয়। তবে এটা সবার জন্য না। যাদের টাকা বাকি আছে বরাদ্দ আসলে তারা সবাই পাবে।

Advertisement

ঝিনাইদহ বরাকের ম্যানেজার স্নেহা বলেন, যাদের টাকা দেওয়া হয়েছে তাদের হাতে হাতেই দেওয়া হয়েছে। কাদের এবং কত টাকা দেয়া হয়েছে এসব তথ্য আমি দিতে পারবো না। আপনাকে কেন দিতে হবে এসব তথ্য। এ কাজ তো অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/আরএইচ/জিকেএস