দেশে নিত্যপণ্যসহ সব জিনিসের দাম ঊর্ধ্বগতি। ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন ও মাধ্যম আয়ের মানুষের। এ অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের মাংসের চাহিদা মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। অনেকে সারাবছরে হয়তো একবারও মাংস কিনে খেতে পারেন না। তাই নিজের শ্রমিকদের মাংসের চহিদা পূরণের উদ্যোগ নিয়েছেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ। দিয়েছেন একটি গরুর খামার। আগামী বছর থেকে প্রত্যেক শ্রমিককে ২ কেজি করে গরুর মাংস সরবরাহ করবেন তিনি।
Advertisement
ব্যবসায়ী আতাউল্লা কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা নারান্দী ইউনিয়ন সনমানিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ক্লারিয়ন ডিজাইনস লিমিটেড ও এমকেএম ডিজাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এছাড়া কিশোরগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের উপদেষ্টাও।
শ্রমিকদের মাংসের চাহিদা মেটানোর কথা চিন্তা করে এক বছর আগে পাকুন্দিয়া উপজেলার নারান্দীতে পাঁচ বিঘা জমিতে একটি গরুর খামার গড়ে তুলেন তিনি। বর্তমানে সেই খামারে ১৫০টি ষাঁড় ও ৫০টি গাভী আছে। এছাড়া কিছু ছাগল, ভেড়া ও গাড়লও পালন করা হচ্ছে তার খামারে।
আতাউল্লাহ বলেন, চট্টগ্রামে আমার দুটি গার্মেন্টস আছে। আমার কারখানার শ্রমিকদের প্রতিদিনই দুপুরের খাবার সরবরাহ করি। একদিন এক শ্রমিককে জিজ্ঞেস করলাম তুমি গরুর মাংস অথবা খাসির মাংস কবে খেয়েছিলা? তখন সে কোরবানির ঈদে গরুর মাংস খাওয়ার কথা জানায়। বিষয়টি আমার মনে খুব দাগ কেটেছে। এ থেকেই একটা গরুর খামার করার পরিকল্পনা করি। ইচ্ছা আছে প্রতি মাসে একজন শ্রমিককে দুই কেজি করে গরুর মাংস দেবো।
Advertisement
এ ব্যবসায়ী বলেন, আমার গরু বিক্রির কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। এখান থেকে চট্টগ্রামের কারখানায় মাংস পাঠানো ব্যয়বহুল বিষয়। এখানে মাংস প্রসেস করতে হবে এরপর ফ্রিজে পাঠাতে হবে। এ বছর খামারে বিক্রি যোগ্য ৬০টি গরু আছে কোরবানি ঈদে সহজ শর্তে আমি এলাকার মানুষদের দিতে পারবো। যদি কেউ কিনতে চায় এখন থেকে নিতে পারবে। এখান থেকে আমার মুনাফার খুব প্রয়োজন নাই। শ্রমিক খরচসহ আমার যা ইনভেস্ট আছে সেটা যদি উঠে এটাই আমার জন্য যথেষ্ট।
তিনি আরও বলেন, খামারে বর্তমানে ১৫০টি ষাঁড়, ৫০টি গাভী আছে। ১০টি গাভী দুধ দিচ্ছে। দু-একমাসের ভেতরেই ৫০টি গাভী দুধ দেবে। চট্টগ্রামে নিতে ও এলাকার স্বল্পমূল্যে বিক্রির জন্য প্যাকেটজাত তরল দুধ করবো। আগামীতে এখানে ডেইরি ফার্ম করবো। এখানে ৬০০ গরু থাকবে। ক্যাটল ফিড থাকবে। এখানেই ষাঁড় প্রজনন করবো। এখান থেকে প্রসেস করে শ্রমিকদের জন্য মাংস চট্টগ্রামে পাঠাবো।
খামারে ম্যানেজার রাকিবুল ইসলাম রনি জাগো নিউজকে বলেন, ১০০টিরও বেশি ষাঁড় কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত আছে। এলাকার হাটে ও খামারেও ডিসপ্লে সেন্টার করা হয়েছে। কাস্টমার তার চাহিদা অনুযায়ী গরু আমাদের খামার থেকে নিতে পারবে। মাঝারি ও বড় গরুও আছে। এছাড়া অনলাইনে আমাদের গরু কিনতে পারবে। এবারের কোরবানি ঈদে আমাদের খামারের মূল আকর্ষণ ভুট্টি ষাঁড়। পিউর শাহিওয়াল ও দেশালও আছে। এছাড়াও খামারে ফ্রিজিয়ান ও সিন্দি জাতের গরু আছে। ১ থেকে ৫ লাখ টাকা মূল্যের ষাঁড় বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
এসজে/এমএস
Advertisement