শাহ সুহেল আহমদ, প্যারিস (ফ্রান্স) থেকে
Advertisement
‘জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী সাংস্কৃতিক দিকটিকে আরও শক্তিশালী করবে। ক্রিয়েটিভ ইকোনোমিক লোকজন সমাজের একটা বড় অংশ। এর প্রভাব অনেক বেশি। আমাদের দেশে সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর কারণে প্রোগ্রেসিভ মনমানসিকতা তৈরি হয়েছে।’
ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ইন ক্রিয়েটিভ ইকোনমি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মুমিন এসব কথা বলেন।
এ বছর পুরস্কার বিজয়ী হয়েছে জিম্বাবুয়ের প্রতিষ্ঠান মিউজিক ক্রসরোডস। এ উপলক্ষে ইউনেস্কো সদরদপ্তরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মুমিন উপস্থিত থেকে মিউজিক ক্রসরোডস-এর প্রতিনিধি মেলোডি যাথুকোর হাতে এই পুরস্কারটি তুলে দেন।
Advertisement
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজয়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ছাড়াও ইউনেস্কোর সংস্কৃতি বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা ও সহকারী মহাপরিচালক আর্নেস্তো অতোনে, ইউনোস্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি খন্দকার এম তালহাসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ইউনেস্কোতে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধির পাশাপাশি সাধারণ পরিষদে যোগদানকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি, প্রবাসী বাংলাদেশি এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রান্সস্থ বাংলাদেশের দূতাবাসের কূটনৈতিক উদ্যোগে এবং সকল সদস্য রাষ্ট্রের সম্মতিক্রমে এই পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরে ২০২১ সালে ইউনেস্কো সদরদপ্তরে অনুরূপ একটি আয়োজনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা প্রথম বিজয়ী প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার তুলে দেন। দ্বি-বর্ষভিত্তিক এই পুরস্কারের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা উদ্ভাবনী সাংস্কৃতিক উদ্যোগসমূহকে উৎসাহিত করা হয়।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, আত্মত্যাগ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করেন এবং তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। একটি সদ্যস্বাধীন দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা আনয়নে বঙ্গবন্ধুর তারুণ্যনির্ভর উদ্ভাবনী অর্থনীতির যে রূপরেখা প্রণয়ন করেছিলেন তা উদ্ধৃত করেন। এই পুরস্কারের ফলে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক মুক্তির দর্শনকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সহকারী মহাপরিচালক আর্নেস্তো অতোনে এমন উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নে উদ্ভাবনী চর্চার গুরুত্ব তুলে ধরেন। ইউনেস্কোর সংস্কৃতি বিষয়ক এই শীর্ষ কর্মকর্তা আরও বলেন, এই পুরস্কার বিতরণের ফলে তরুণ সমাজ উদ্ভাবনী অর্থনীতির দর্শনকে ধারণ করবে এবং তা চর্চার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বাস্তবায়নে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করবে।
Advertisement
বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি ইলান স্টিফেনস জানান, এ বছর বিশ্বের ১৯টি দেশ থেকে পুরস্কারের বিবেচনার জন্য মোট ৮৪টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন জমা পড়ে। তবে বিজয়ী প্রতিষ্ঠানকে তাদের উদ্ভাবনী চর্চা ও আন্তঃসাংস্কৃতিক সংযোগ স্থাপনে নারী ও তরুণদের সম্পৃক্ত করার জন্য পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
আলোচনা শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পুরস্কারের স্মারক বিজয়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির হাতে তুলে দেন। এ সময় ইউনেস্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং স্থায়ী প্রতিনিধি খন্দকার এম তালহা বিজয়ীকে সনদপত্র দেন। পুরস্কার বিতরণ শেষে ফ্রান্স-প্রবাসী বাংলাদেশের একটি ব্যান্ডদল মনমুগ্ধকর সংগীত পরিবেশন করেন।
এমআরএম/এএসএম