আন্তর্জাতিক

এশিয়ায় আফিমের উৎপাদন বাড়ছেই : জাতিসংঘ

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তথা মাদক পাচারের বিখ্যাত রুট ‘গ্লোডেন ট্রায়াঙ্গেল’ (মিয়ানমার-লাওস-থাইল্যান্ড) এলাকায় আফিমের উৎপাদন বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ২০০৬ সাল থেকে তা তিনগুণ হয়েছে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ সংক্রান্ত বিভাগ (ইউএনওডিসি) সোমবার বলেছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাৎসরিক আফিম সংক্রান্ত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মিয়ানমার ও লাওসে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আফিমের চাষ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ৮০০ হেক্টরে, যা ২০০৬ সালের চেয়ে ২১ হাজার ৬০০ হেক্টর বেশী।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ তথ্য থেকে এটা প্রমাণিত যে, গত ৮ বছর ধরে এই অঞ্চলে আফিমের উৎপাদন বৃদ্ধির ধারায় রয়েছে। ফলে প্রতিবছর প্রায় ১৬০০ কোটি ডলারের মাদক ব্যবসা হচ্ছে।আফগানিস্তানের পর মিয়ানমারই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আফিম উৎপাদনকারী দেশ। চলতি বছর মিয়ানমার ও লাওস ৭৬২ টন আফিম উৎপাদন করেছে। এ সব আফিম প্রক্রিয়াজাত করে প্রায় ৭৬ টন হেরোইন উৎপাদন হবে এবং তা এই অঞ্চলসহ বিশ্ববাজারে ছড়িয়ে পড়বে। এতে বাড়বে মাদক গ্রহণকারীর সংখ্যা।ইউএনওডিসির আঞ্চলিক প্রতিনিধি জেরেমি ডগলাস বলেছেন, ‘এ সব মাদক নিয়ে সীমান্তে ব্যাপক দুর্নীতির ঘটনা ঘটে, যা আমাদের জন্য বড়ই উদ্বেগের বিষয়।’ এর ফলে এই অঞ্চলের (আসিয়ান) উন্নয়ন হুমকির মুখে পড়বে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সংস্কারপন্থী সরকারের মাদক উৎপাদন হ্রাসসংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও দেশটিতে আফিমের উৎপাদন বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আর মিয়ানমারে যে পরিমাণ আফিম চাষ হয়, তার ৮০ ভাগই (৫১ হাজার ৪০০ হেক্টর) হয় দেশটির শান রাজ্যে। অথচ এই অঞ্চলেই সংঘটিত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধ, যা ৫০ বছরের বেশী সময় ধরে চলেছে। অবশেষে শান্তিচুক্তির মাধ্যমে সেই যুদ্ধের অবসান ঘটে।এ ব্যাপারে মিয়ানমারের তথ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় কমিটিকে অনুরোধ করা হলেও কোনো মতামত দিতে রাজি হয়নি। তবে দেশটির প্রধান বিরোধী দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) মুখপাত্র ইউ নিয়ান উইন বলেন, ‘সমস্যাটি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভয়াবহ। কারণ এই অঞ্চলে কোনো আইন নেই।’এ ধরনের মাদক ব্যবসা দেশটির শান বিদ্রোহীদের সঙ্গে করা শান্তিচুক্তিকে বাধাগ্রস্ত করবে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। উইন বলেন, ‘বার্মায় (মিয়ানমারের অপর নাম) শান্তি না থাকলে সমস্যা আরও ঘনীভূত হবে।’ সূত্র : আলজাজিরা

Advertisement