গত শনিবার পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজি ১০০ টাকায় উঠেছিল। রোববার সন্ধ্যায় পর দিন (সোমবার) থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার খবর আসে। সোমবার আইপিও দেওয়া শুরু হওয়ার পরপরই পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২৫ টাকা কমে যায়। তবে ওইদিন খুচরা বাজারে দামে কোন প্রভাব পড়েনি।
Advertisement
একদিন বাদে আজ মঙ্গলবার (৬ জুন) থেকে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। তবে পাইকারি বাজারের তুলনায় দাম কমার প্রবণতা অনেক ধীরগতির। সরেজমিনে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারে মঙ্গলবার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল প্রতি কেজি ৯০ টাকা দরে। বিক্রেতা বিসমিল্লাহ স্টোরের সুমন বলেন, গতকাল (সোমবার) পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ১০০ থেকে ১০৫ টাকায়।
সেগুনবাগিচা থেকে রামপুরা ও খিলগাঁও বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও ৫ টাকা কমে বিক্রি হতে দেখা গেছে। সেখানে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়।
Advertisement
রামপুরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রেতা এনামুল হক বলেন, আগে কেনা পেঁয়াজ এখনো বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ পেঁয়াজগুলো শনিবারে ৯২ টাকায় কেনা। কিন্তু এখন পাইকারি বাজারে দাম কম। সে কারণে বাধ্য হয়ে লোকসান দিতে হচ্ছে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার মসলাজাতীয় পণ্যের পাইকারি ব্যবসাকেন্দ্র শ্যামবাজারের সোমবার একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিপ্রতি ২৫ টাকা। সেখানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়, যা রোববার ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। তবে মঙ্গলবার আর দাম খুব একটা কমেনি।
তবে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পেঁয়াজ আমদানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করায় বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে প্রচুর পেঁয়াজ আসছে। কাল-পরশুর মধ্যে এ পেঁয়াজগুলো পাইকারি বাজারে এসে পৌঁছাবে। তখন দাম আরেক দফা কমবে।
শ্যামবাজারের বিক্রমপুর হাউসের খোকন ইসলাম বলেন, একদিনে পেঁয়াজের দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় নেমে এসেছে। মঙ্গলবার আর কমেনি। তবে ভারতের পেঁয়াজ বাজারে ডুকলে আরও দাম কমতে পারে।
Advertisement
এদিকে শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শুধু পাইকারি বাজারে নয়, আমদানির খবরে দেশের গ্রামাঞ্চলের মোকামও পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে।
শ্যামবাজারে পেঁয়াজের দামে সাধারণত দ্রুত ওঠানামা হয়। অন্য পাইকারি বাজারে প্রভাব পড়ে একটু দেরিতে। খুচরা বাজারে এর প্রভাবে থাকে দীর্ঘসূত্রতা। বিক্রেতারা বেশি দামে কেনা পণ্য পাইকারিতে কমলেও দাম কমাতে চান না। যদিও কোনো পণ্যের দাম বাড়ার খবরের সঙ্গে সঙ্গে তারা দাম বাড়িয়ে দেন।
কারওয়ান বাজারের আড়তে মঙ্গলবার দুপুরে দেখা যায়, কোনো কোনো দোকানে পাঁচ কেজি কেনার ক্ষেত্রে কেজিপ্রতি দর ৮০ টাকা, কোথাও ৭৮ টাকা। আবার সেই পেঁয়াজ কারওয়ান বাজারের পাশে মুদি দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়।
জানতে চাইলে হাতিরপুল এলাকার মুদি দোকানি সোহাগ মিয়া বলেন, পেঁয়াজের দাম কমেছে জানি, কিন্তু এগুলো আরও বেশি দামে কেনা ছিল। তারপরও কিছুটা লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।
দামের এত হেরফের কেন তা জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, বাজার যখন অস্থির হয়, তখন এ অবস্থা হয়। আরও দাম বাড়বে এ শঙ্কায় অনেক বেশি দাম দিয়ে পেঁয়াজ নিয়ে এসেছে খুচরা বিক্রেতারা। আর পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ আসবে বলে কেউ কেউ কম দামে ছেড়ে দিচ্ছেন। তারা প্রতিদিন ক্রয়-বিক্রয় করেন। তারা দিনের দাম দিনে নির্ধারণ করতে পারেন। কিন্তু আমাদের কয়েকদিনের পেঁয়াজ একসঙ্গে কেনা। হুট করে দাম কমালে লোকসান হয়।
এনএইচ/এমআইএইচএস/এএসএম