বাইরে বাঁশের বেড়া, আর ঘর টিনের। দেখলে চোখে পড়ার মতো তেমন কিছু না। কিন্ত ভেতরে এসি রুম, উন্নত শয়নকক্ষ, এটাচ বাথরুম, ইয়াবা সেবনের ব্যবস্থা। আমুদ-ফুর্তির সব উপকরণ রাখা সেখানে। ছিল একাধিক গোপন ক্যামেরাও। এই গোপন ক্যামেরা দিয়ে অনৈতিক কাজের ছবি এবং কর্মকাণ্ড রেকর্ড করা হতো। আর এই আলিশান হেরেমখানায় মেয়েদের আনতে ব্যবহার করা হতো ফেসবুক গ্রুপ। যেই গ্রুপের এডমিন মো. মনির হোসাইন (৩৫) নামে এক ব্যক্তি। তিনি একটি সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা।
Advertisement
রোববার (৪ জুন) ঢাকার রামপুরা থেকে মনিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ও ছবি সম্বলিত দুটি মোবাইল, তিনটি সিম কার্ড, দুটি মেমোরি কার্ড এবং দুটি গোপন ক্যামেরা জব্দ করা হয়।
আরও পড়ুন: ওসি একাই ৩ বার আমাকে ধর্ষণ করেছেন, তারপর এসআই
সোমবার (৫ জুন) বিকেলে এ তথ্য জানান সিআইডির মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান।
Advertisement
তিনি বলেন, সিআইডির সাইবার পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ আসে যে, ‘এসএসসি বন্ধন ২০০১ বাংলাদেশ’ নামে ফেসবুক গ্রুপের এডমিন মনির হোসাইন এক নারী সদস্যকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, প্রথমে ওই নারীকে গ্রুপের সদস্য করেন মনির। এরপর তাকে মডারেটর বানানোর প্রস্তাব দেন। ওই নারীকে গ্রুপে আরও ক্ষমতাবান করা হবে এবং নানা সুবিধা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন জায়গায় এক সঙ্গে ঘুরে বেড়ান মনির। এভাবে সখ্যতা গড়ে তোলে তার সঙ্গে। একপর্যায়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন মনির। আর এসব কর্মকাণ্ডের ছবি ও ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন মনির।
আরও পড়ুন: ফজরের নামাজ পড়তে উঠে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করলেন মাদরাসা শিক্ষক
সিআইডি জানায়, অভিযোগকারী ওই নারী সদস্য ছাড়াও গ্রুপের একাধিক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন মনির হোসাইন। এজন্য বাড্ডা এলাকায় আলিশান গোপন হেরেমখানা তৈরি করেন তিনি। সেখানে গোপন ক্যামেরা দিয়ে অনৈতিক কাজের সব ছবি এবং কর্মকাণ্ড রেকর্ড করে রাখতেন মনির।
তদন্তের বিষয়ে সিআইডি জানায়, ‘এসএসসি বন্ধন ২০০১ বাংলাদেশ’ গ্রুপের এডমিন হিসেবে মনির নারীদের সঙ্গে প্রথমে ভিডিও কলে কথা বলেন। এরপর স্ক্রিন রেকর্ড করে ব্ল্যাকমেইল করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করেন। এমনকি জোর করে ছুরির ভয় দেখিয়েও ধর্ষণ করতেন তিনি। অভিযোগকারী ওই নারীর স্বামী অফিসে চলে গেলে কখনো কখনো মনির তার বাড়ি গিয়ে হানা দিতেন। তার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে আইনি ব্যবস্থা নেন ওই নারী।
Advertisement
আরও পড়ুন: বাবার জানাজায় না গিয়ে ভাতিজিকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলল চাচা
সিআইডি জানায়, মনির বিভিন্ন মেয়েকে নিজের কব্জায় নিয়ে টাকার বিনিমেয়ে ধনাঢ্য লোকদের কাছে পাঠাতেন।
গ্রেফতার মনির হোসাইনের বিরুদ্ধে রাজধানীর রূপনগর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।
আরএসএম/জেডএইচ/জেআইএম