মাদরাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করে হামলার শিকার হয়েছেন নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সাহাব উদ্দিন (৪৫)।
Advertisement
রোববার (৪ জুন) রাত ৯টার দিকে পার্শ্ববর্তী চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রামেশ্বর গ্রামের খেবারগো মোকামে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় চেয়ারম্যানের কলেজপড়ুয়া ছেলে আবু বক্কর ছিদ্দিক জিহাদ (১৮) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (৫ জুন) বিকেলে চেয়ারম্যান মো. সাহাব উদ্দিন ধানশালিক ইউনিয়ন পরিষদের নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান। এ সময় তিনি ইভটিজিং ও হামলার ঘটনায় বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
Advertisement
তিনি বলেন, মেয়ে চাপরাশিরহাট এ রব সিনিয়র মাদরাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ে। মাদরাসায় আসা-যাওয়ার পথে স্থানীয় আকাশ (২৫), একরাম (২৭), দিপু (২৭) ও টুটুলসহ (২৮) বখাটেরা মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছে। তারা নানাভাবে যৌন হয়রানিসহ বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হলে অ্যাসিড মারারও হুমকি দেয়। বিষয়টি জানালে আমার ছেলে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসা করতে যায়। এ সময় বখাটেরা ছেলেকে বেধড়ক মারধর করে আটকে রাখে।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই এবং চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন টিটুকে জানালে তিনিও আসেন। পরে ওই চেয়ারম্যানের সামনে বখাটেরা কয়েকজন মিলে আমাদের ওপর লাঠিসোটা ও লোহার রড নিয়ে হামলা চালায়। আমার ছেলেকে রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে এবং আমি লাঞ্ছিত হই। আমার পাঞ্জাবির পকেট থেকে পাঁচ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা। স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমাদের হাসপাতালে পাঠায়। এ বিষয়ে কবিরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকেও জানিয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে ধানশালিক ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সফিউল্যাহ বাচ্চুসহ সব সদস্য এবং এলাকার ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। তারাও এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। তা না হলে মানববন্ধনসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
এদিকে খোঁজ করেও অভিযুক্তদের কাউকে এলাকায় পাওয়া যায়নি। তাদের মোবাইল ফোনগুলোও বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয়রা জানান, রাতের ঘটনার পর থেকে চিহ্নিত ওই গ্রুপটি গা-ঢাকা দিয়েছে। তাদের এলাকায় দেখা যাচ্ছে না।
Advertisement
মোবাইলে জানতে চাইলে চাপরাশিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন টিটু জাগো নিউজকে বলেন, আমি একটি সালিশ বৈঠকে ব্যস্ত আছি। এ নিয়ে পরে আপনার সঙ্গে কথা বলবো।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ বেশ কয়েকবার ঘটনাস্থলে গেছে। অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় কাউকে আটক করা যায়নি। চেয়ারম্যানের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোর্তাহীন বিল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ইভটিজিংকারী বখাটেদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। চেয়ারম্যানের ওপর হামলাকারীদের কাউকে একবিন্দুও ছাড় দেওয়া হবে না।
ইকবাল হোসেন মজনু/এসজে/জেআইএম