রাজনীতি

জনগণ বিল দিয়েই বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে, টাকা থাকবে না কেন

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বিদ্যুৎসংকট সমাধানে ভারত থেকে কম দামে কয়লা আনা যেত। টাকা নেই দেখে ভারত এখন কয়লা দিচ্ছে না। কিন্তু দেশের জনগণ বিদ্যুৎবিল পরিশোধ করেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছে। তাহলে টাকা থাকবে না কেন? কয়লা কিনতে পারবে না কেন?

Advertisement

সোমবার (৫ জুন) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও জিয়াউর রহমান বীর উত্তম সমার্থক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ সভার আয়োজন করে।

আরও পড়ুন>> কয়লা সংকটে পুরোপুরি বন্ধ পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র

প্রধানমন্ত্রী উদ্দেশে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ভারত তো আপনার পরম বন্ধু। তাহলে সাহায্য করছে না কেন? তার মানে ভারত এখন আপনার বন্ধু না। আমেরিকাও এখন আপনার সঙ্গে নেই। বাংলাদেশকে এমন একটি বন্ধুহীন রাষ্ট্রে আপনি পরিণত করেছেন। এমনকি রাশিয়া-চীন আপনার সঙ্গে আছে, এর প্রমাণও আপনি দিতে পারবেন না। কারণ এ সংকটকালে তারা আপনার পাশে এসে দাঁড়ায়নি।

Advertisement

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার জন্য একটা পথই খোলা আছে। তিনি যদি বেগম খালেদা জিয়ার কাছে হাজির হয়ে বলতে পারেন, ‘আসেন সবাই মিলে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন করি।’ তাহলে হয়তো তিনি রক্ষা পেতে পারেন।

আরও পড়ুন>> নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শঙ্কা ‘গাজীপুর মডেল’

তিনি বলেন, আজকে ঘোষণা এসেছে, পায়রা বন্দর স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। সব বন্ধ হয়ে যাবে। আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) এখন একমাত্র রক্ষা করতে পারেন বেগম খালেদা জিয়া। এটা আপনাকে মানতে হবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান দুদু বলেন, দেশের অভ্যন্তরে এবং সারাবিশ্বে একটি জিনিস অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে গেছে, সামনের সময়টি পরিবর্তনের সময়। এবছরই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে, এটা তিনিও জানেন। তিনি এত অপকর্ম করেছেন, ক্ষমতা ছাড়া বাদে আর কোনো পথ নেই।

Advertisement

আরও পড়ুন>> নির্বাচনকালীন সরকার কখন হবে সে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী

এ বিএনপি নেতা বলেন, জিয়াউর রহমান এমন একজন মানুষ ছিলেন, যাকে শ্রদ্ধা না জানালে, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ সম্মানিত হয় না, শিষ্টাচার উন্নত জায়গায় গিয়ে পৌঁছায় না। তাকে নিয়ে গর্ব করা যায়। যার সংস্পর্শে থেকে নিজেকে উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যেতো, তার সঙ্গে দেশের কারও তুলনা হয় না। সারাবিশ্বে প্রতিষ্ঠিত যেসব রাষ্ট্র নায়ক, যোদ্ধা, মুক্তি সংগ্রামী আছেন, সেই পর্যায়ের মানুষ হচ্ছেন জিয়াউর রহমান।

আরও পড়ুন>> নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে মন্ত্রীর বক্তব্য ‘শব্দচয়নে ভুল’

শেখ হাসিনা নিজেকে ইতিহাসের পাতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দুইবার সুযোগ পেয়েছিলেন উল্লেখ করে দুদু বলেন, যারা কয়লা খায়, তারা ভালো কিছু খেতে পারে না। ওরা শুধু কয়লাই খায়। আপনি (শেখ হাসিনা) ২০১৪ সালের নির্বাচন ভালো করতে পারতেন, সুযোগ ছিল আপনার। খালেদা জিয়া আপনার পাশে এসে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আপনার অহংকারে মাটিতে পা পড়ে না। আপনি ২০১৪ সালের নির্বাচন করে নিজেকে এমন একটি ঘৃণিত জায়গায় নিয়ে গেলেন, যা আর পরিবর্তন হবে না। আবার আপনি ২০১৮ সালে সুযোগ পেলেন। সব বিরোধীদলকে আপনি বিশ্বাস করতে বলেছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সালের নির্বাচন আপনার দিনে করার সাহস হলো না, করলেন রাতের বেলা।

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ-সভাপতি আব্দুল হালিম, সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মো. আনোয়ার, মোবারক হোসেন প্রমুখ।

কেএইচ/ইএ/এমএস