‘আগে বলা হতো স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। আমি বলবো পরিবেশ এখন বাঁচার মূল। কারণ পরিবেশ না বাঁচলে স্বাস্থ্য বাঁচবে না। আমাদের শরীরে যত প্রকার রোগের বাসা, সবকিছু কিন্তু পরিবেশ দূষণ থেকে হয়েছে।’
Advertisement
সোমবার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে শনিবার (৩ জুন) জাগো নিউজ আয়োজিত ‘পরিবেশ সচেতনতা ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ-এর সিএসআর প্রতিষ্ঠান টেল প্লাস্টিকের নির্বাহী পরিচালক মো. কামরুল হাসান। এ বছর ‘প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে শামিল হই সকলে’ প্রতিপাদ্যে ও ‘সবাই মিলে করি পণ, বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ’ স্লোগানে পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস।
মো. কামরুল হাসান বলেন, টেল প্লাস্টিক প্রাণ-আরএফএলের একটি সিএসআর প্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশর একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যেটি পরিবেশের জন্য কাজ করে। যার স্লোগানই হচ্ছে, পরিবেশের জন্য ব্যবসা। ২০১২ সালে এই টেল প্লাস্টিক যাত্রা শুরু করে। এটার উদ্দেশ্যেই ছিল পরিবেশ রক্ষায় কাজ করা। আমাদের প্রাণ-আরএফএলের প্রয়াত চেয়ারম্যান আমজাদ খান চৌধুরী জানতেন, একটা সময় এই প্লাস্টিক পরিবেশের ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যেহেতু আমরা প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন করি। তিনি এটাও জানতেন পরিবেশ রক্ষায় একটা সময় ব্যাপক আলোচনা হবে।
টেল প্লাস্টিকের নির্বাহী পরিচালক মো. কামরুল হাসান বলেন, পৃথিবীতে এখন যে প্লাস্টিকটা পরিবেশ দূষণ করে, সেটা কিন্তু রিসাইকেবল না। এটার মূল্যও নেই। আমরা দেখেছি চিপসের প্যাকেট, পলিথিনজাতীয় প্লাস্টিক পরিবেশ সবচেয়ে বেশি দূষণ করছে। এগুলো রিসাইক্লিং করা যায় না। এগুলো কেউ সংগ্রহও করে না। কারণ একজন মানুষ সারাদিন এগুলো সংগ্রহ করলেও এককেজি হয় না। এতে তার কোনো আয় হয় না। তখন একজন ব্যক্তি সেই প্লাস্টিকই সংগ্রহ করবে, সেটি রিসাইকেল করা যায়।
Advertisement
তিনি বলেন, আমরা অনেকে মনে করি আরএফএল প্লাস্টিক তৈরি করে। আরএফএলই পরিবেশ দূষণ করে। কিন্তু আমি বলবো, পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় ঘুরেও একটি ভাঙা প্লাস্টিকের চেয়ার, টেবিল বা অন্য পণ্য খুঁজে পাওয়া যাবে না। আরএফএলের প্লাস্টিকপণ্য ভাঙা হলেও তার মূল্য আছে। তাই এ প্লাস্টিক রাস্তায় পড়ে থাকে না।
টেল প্লাস্টিকের সারাদেশে পাঁচ হাজারের বেশি কালেক্টর (প্লাস্টিক সংগ্রহ করে এমন ব্যক্তি) আছেন জানিয়ে কামরুল হাসান বলেন, যারা টেল প্লাস্টিকের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। আমরা ভাঙা প্লাস্টিকও উচ্চদামে তাদের কাছ থেকে কিনছি। যাতে প্রচুর ভাঙা প্লাস্টিক কালেকশন হয়।
তিনি আরও বলেন, এখন ভিক্ষুকও সকালবেলা প্লাস্টিক পণ্য রাস্তা থেকে সংগ্রহ করে। তারাও এখন ডাবল জব বা কাজ করছে। প্রথমত সে এক বাড়ি থেকে যখন অন্য বাড়িতে যাচ্ছে, রাস্তায় পড়ে থাকা প্লাস্টিক সংগ্রহ করে আলাদা পাত্রে নিচ্ছে। আবার সেগুলো বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। তাই আমরা যারা প্যাকেটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত, তাদের কাজ হবে পুনরায় যাতে তা ব্যবহার করা বা রিসাইক্লিং করা যায়। যাতে এটার আর্থিক মূল্য থাকে।
রিসাইকেল পণ্য ব্যবহারে গ্রাহকদেরও ভূমিকা থাকা দরকার জানিয়েছে টেল প্লাস্টিকের নির্বাহী পরিচালক বলেন, গ্রাহকরা যখন শোনে এটা রিসাইকেল পণ্য, তখন তিনি তা নিতে চান না। বিশ্বের উন্নত দেশে রিসাইকেল পণ্যের দাম দেড়গুণ বেশিতে বিক্রি করে। এক্ষেত্রে গ্রাহকদের সেটা বুঝতে হবে।
Advertisement
তিনি বলেন, পরিবেশের জন্য যারা কাজ করবেন, তাদের সরকার থেকে গ্রিন অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। গত ৩ জুন আমাদের যারা কালেক্টর আছেন, তাদের মধ্যে থেকে সেরা ১০ জনকে ‘পরিবেশ বন্ধু পুরস্কার’ দিয়েছি। এতে তারা প্লাস্টিক সংগ্রহে আরও উৎসাহ পাচ্ছেন।
এমএমএ/বিএ/জেআইএম