প্রায় ১৫০ বছর আগে শিল্প বিপ্লবের শুরু থেকে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বনের পরিমাণ বাড়িয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন গত কয়েক দশকে এই নির্গমন হ্রাস জলবায়ু পরিবর্তনের গতি ধীর করেছে, এমনকি ভবিষ্যতে থামিয়েও দিতে পারে। কার্বন নিঃসরণ কমানোর তাৎক্ষণিক সুবিধা থাকলেও এটি রাতারাতি সমাধান করার উপায় নেই।
Advertisement
পরিবেশ দূষণের অন্যতম একটি ক্ষেত্র হলো পরিবহন খাত। যানবাহনের নির্গত ধোঁয়ার ঘনত্বের সহনীয় মাত্রা ৬৫ এইচএসইউ। এর মধ্যে একটি গাড়িতে পাওয়া যায় ৯৫, একটিতে ৯২। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীতে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে দেখা গেছে বেশিরভাগ গাড়িই নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি দূষিত ধোঁয়া ছাড়ছে। প্রায় প্রতিটি গাড়িতেই আবার বেঁধে দেওয়া মাত্রার চেয়ে উচ্চ শব্দের হর্ন ব্যবহার করা হচ্ছে।
জ্বালানি সাশ্রয়ী অর্থনীতি ও গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমানোর বৈশ্বিক প্রবণতার অনুসরণে বাংলাদেশেও বিদ্যুৎচালিত গাড়ির (ইভি) ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। এমনকি পুরোবিশ্ব পরিবেশ রপক্ষায় বৈদ্যুতিক যানের দিকে ঝুঁকছে।
এরই মধ্যে টেসলা, ফোর্ড, রিভিয়ান, এনআইওর মতো গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো একাধিক বৈদ্যুতিক গাড়ি এনেছে বাজারে। বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটারের সংখ্যাও কম নয়। হোন্ডা, রয়্যাল এনফিল্ড, সুজুকি, ওলাসহ অনেক সংস্থা নিয়ে এসেছে তাদের নিজস্ব বৈদ্যুতিক বাইক ও স্কুটার, যা জনপ্রিয়তা পেয়েছে খুব অল্প দিনেই।
Advertisement
আরও পড়ুন: এক চার্জে ৩২০ কিলোমিটার চলবে ই-কার
তবে এই দশকে নয়, বরং প্রথম ব্যবহারিক বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি হয়েছিল ১৮৮০ এর দশকে। এরপর নানা গবেষণা ও অগ্রগতির পর ২০০৮ সাল থেকে ব্যাটারি শক্তির উন্নতি, গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ হ্রাস এবং নগরীর বায়ুদূষণের মানের উন্নতি করার কারণে বৈদ্যুতিক যানবাহন উৎপাদন আবার শুরু হয়।
আরও পড়ুন: এক চার্জে ১১০ কিলোমিটার চলবে এই ই-স্কুটার
পরিবেশ সুরক্ষায় উন্নত দেশগুলো এরই মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা হয় এমন যানবাহনের সংখ্যা কমানোর চিন্তা শুরু করেছে। ইউরোপে ২০৪০ সালের মধ্যে জ্বালানির পরিবর্তে বৈদ্যুতিক গাড়ি চালু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও বেশ কয়েকটি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারজাত শুরু করেছে। যদিও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ চালিত ইলেকট্রিক গাড়ি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। শিগগির দেশেও দেখা যাবে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি। তবে দেশে বিদ্যুৎ সংকট কাটিয়ে কতটা অগ্রগতি হবে বৈদ্যুতিক গাড়ির তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুকাল।
Advertisement
কেএসকে/জিকেএস