দেশজুড়ে

গাছে গাছে প্রচারণার পেরেক, হুমকিতে পরিবেশ

মাদারীপুর শহরসহ বিভিন্ন অলিগলি এমনকি গ্রামের রাস্তা ও মোড়ের গাছে গাছে পেরেক ঢুকিয়ে টাঙানো হয়েছে বিভিন্ন সাইনবোর্ড, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড। রাজনীতিবিদের শুভেচ্ছা বাণী, চিকিৎসাসেবা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন, বাসা ভাড়ার বিজ্ঞাপন, কোচিং সেন্টারের প্রচারণাসহ বিভিন্ন ধরনের সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়েছে গাছে পেরেক ঢুকিয়ে।

Advertisement

তবে স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, যে গাছ শীতল ছায়া দেয়, সে গাছে লোহার পেরেক মারা নিষ্ঠুরতার শামিল। পেরেক ঢুকিয়ে এই প্রচারের জন্য ক্ষতি হচ্ছে গাছগুলোর এবং হুমকির মুখে পড়ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাদারীপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র শকুনি লেকপাড়, হাসপাতাল রোড, টিবি ক্লিনিক রোড, বকুলতলা, পুরানবাজার রোড, চরমুগরিয়া, এমনকি মাদারীপুর সদর উপজেলা অফিসের কার্যালয়ের রাস্তাসহ বিভিন্ন জায়গার গাছে গাছে পেরেক ঢুকিয়ে বিভিন্ন সাইনবোর্ড লাগানো আছে। এই চিত্র কেবল মাদারীপুর শহরেই নয়, জেলার পাঁচ উপজেলার রাস্তাঘাটের গাছগুলোর একই দশা। দীর্ঘদিন ধরে এই চিত্র দেখা গেলেও গাছ বাঁচাতে প্রশাসনের তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

মাদারীপুরের সচেতন নাগরিক দিদার মোল্যা বলেন, গাছেরও প্রাণ আছে। এই কথাটি আমরা ভুলে যাই। তাই গাছের সঙ্গে আমরা এমন অত্যাচার করি, যা মোটেই ঠিক না। গাছ আমাদের অক্সিজেন দিচ্ছে। তাছাড়া বর্তমানে যে পরিমাণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে প্রতিটি মানুষের উচিত বেশি বেশি গাছ লাগানো ও গাছের প্রতি অধিক যত্নবান হওয়া। আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আমাদের এই অঙ্গীকার হোক।

Advertisement

মাদারীপুরের পরিবেশবাদী সংগঠন ফ্রেন্ডস অব নেচারের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক রাজন মাহমুদ বলেন, প্রশাসনিকভাবেই এসব সাইনবোর্ড অপসারণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ গাছেরও প্রাণ আছে। পেরেক মারার কারণে গাছগুলোর ক্ষতি হয়। অনেক সময় গাছ মরেও যেতে পারে। তাই পরিবেশ রক্ষার জন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।

মাদারীপুরের স্থানীয় সংগঠন দেশগ্রামের নির্বাহী পরিচালক এ বি এম বজলুর রহমান খান বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য গাছের গুরুত্ব অনেক। তাই গাছগুলোকে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসন থেকে উদ্যোগ নিয়ে এগুলো অপসারণ করতে হবে।

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাইনউদ্দিন বলেন, আমরা দ্রুত অভিযান চালিয়ে সাইনবোর্ডগুলো গাছ থেকে অপসারণের ব্যবস্থা করবো।

 

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এমআরআর/জিকেএস

Advertisement