কৃষি ও প্রকৃতি

কারিশমা জাতের তরমুজ চাষে সবুজের সাফল্য

প্রথমবারের মতো জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বারোমাসি কারিশমা জাতের তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন আব্দুল আলীম সবুজ সরকার নামে এক তরুণ উদ্যোক্তা। মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করে বাম্পার ফলনে খুশি তিনি। কৃষি বিভাগ বলছে, দিনদিন তরমুজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অনেক বেকার তরুণ। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

Advertisement

সবুজ উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের সাতপোয়া গ্রামের আজিজর সরকারের ছেলে। তিনি ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে মাস্টার্স করছেন। পড়ালেখা শেষ করার আগেই নিজেকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত করতে চান।

তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন কিছু একটা করার। স্বপ্ন দেখতেন, কখনো বেকার থাকবেন না। তারপর বাবার ১০ শতাংশ জমিতে মাচাং পদ্ধতিতে থাই কারিশমা হাইব্রিড জাতের তরমুজ চাষ শুরু করেন। এক থেকে দেড় ফুট দূরত্বে চারা রোপণ করে বর্তমানে প্রতিটি গাছে ফলন হয়েছে তিন থেকে চারটি। ওজন আড়াই থেকে তিন কেজি। মাত্র ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন তিনি।

আরও পড়ুন: জ্যৈষ্ঠ মাসকে মধুমাস বলা হয় কেন?

Advertisement

এর আগেও তিনি কৃষি অফিসের সহযোগিতায় বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন। তাই কৃষি অফিসের পরামর্শে বেশি লাভের আশায় প্রথমবারের মতো হাইব্রিড জাতের এই তরমুজ চাষ শুরু করেন। এখন এলাকাজুড়ে পরিচিতি বেড়েছে তার। সবুজের এই সাফল্য আশা জাগিয়েছে এলাকাবাসীর মাঝেও।

স্থানীয়রা জানান, এর আগে কখনো এভাবে তরমুজ চাষ করতে দেখেননি তারা। এটি দেখে তারা অবাক হয়েছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। আগামীতে অল্প জমিতে কীভাবে তরমুজ চাষ করা যায়; সে বিষয়ে তারা সবুজের কাছে শিক্ষা নেবেন।

উপজেলায় প্রথমবারের মতো তরমুজ চাষে সাফল্যের খবরে ছুটে আসছেন অনেকেই। কেউ কেউ মাঠ থেকেই টাটকা তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কথা হয় মিঠুন, সজীব, শাহীনসহ অনেকের সঙ্গে। তারা জানান, তাদের উপজেলায় কেউ তরমুজ চাষ করেন না। তাই সবুজের নতুন পদ্ধতির চাষাবাদ দেখতে ছুটে এসেছেন। চিন্তা করছেন, যেহেতু কম খরচে কম জমিতে বেশি ফলন পাওয়া যায়, তাই আগামীতে তারাও চাষ করবেন।

আরও পড়ুন: জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলের সমাহার

Advertisement

সরিষাবাড়ী উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘চারা রোপণ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সার্বক্ষণিক তার সঙ্গে কৃষি বিভাগ যোগাযোগ রেখেছে। ভবিষ্যতে এ চাষাবাদ সম্প্রসারণ করা গেলে উপজেলায় বেকার সমস্যা দূর হবে।’

সরিষাবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার অনুপ সিংহ মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, ‘অল্প জমিতে এ হাইব্রিড জাতের তরমুজ চাষ অনেক লাভজনক। দিন দিন এতে ঝুঁকছেন চাষিরা। ১ বিঘা জমিতে ১ হাজার থেকে ১২০০ চারা রোপণ করা যায়। রোপণের ৬০-৬৫ দিনের মধ্যে বিক্রির উপযোগী হয়। এ বিষয়ে কৃষকদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

মো. নাসিম উদ্দিন/এসইউ/এমএস