অনাবৃষ্টির কারণে এবার লিচুর আকার অপেক্ষাকৃত ছোট হয়েছে। এর মধ্যে আবার চলমান তাপপ্রবাহের কারণে লিচুর গায়ে পোড়া দাগ দেখা যাচ্ছে। সেইসঙ্গে ফেটে যাচ্ছে লিচু। এ অবস্থায় গাছে রাখতে না পেরে লিচু বাজারে নিয়ে কাঙ্ক্ষিত দামও পাচ্ছে না বাগানিরা। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।
Advertisement
দিনাজপুর শহরের নিউ মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, তাপপ্রবাহের কারণে আমদানি বেশি হওয়ায় লিচুর দাম পড়ে গেছে। কয়েকদিন আগের তুলনায় লিচুর দাম অর্ধেকে নেমেছে। এছাড়া তেমন ক্রেতাও নেই বাজারে।
লিচুর জন্য বিখ্যাত দিনাজপুর সদর ও বিরল উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র রোদের কারণে অধিকাংশ লিচুর খোসা পুড়ে গেছে। কিছু লিচুর আকৃতি বড় হতেই সে পোড়া খোসা ফেটে যাচ্ছে। এতে মৌসুমের মাঝামাঝি এসে লোকসানের শঙ্কায় পড়েছেন লিচু চাষি ও বাগান লিজ নেওয়া ব্যবসায়ীরা।
শহরের নিউ মার্কেট এলাকার লিচু ব্যবসায়ী ইত্যাদি ফল ভাণ্ডারের মালিক মেহেরুল ইসলাম আঙ্গুর বলেন, প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে চাষি ও বাগানিরা গাছে লিচু রাখতে পারছেন না। তাপদাহে লিচু পুড়ে ও ফেটে যাচ্ছে। সে কারণে সবাই লিচু পাড়া শুরু করেছেন। এতে করে আমদানি বেশি হওয়ায় দাম পড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (১ জুন) পর্যন্ত ১০০ পিস বেদানা লিচুর দাম ৮০০ টাকা, বোম্বাই ৩০০ টাকা, মাদ্রাজি ২৫০ টাকা, হাড়িয়া বেদানা ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। শুক্রবার (২ জুন) সেই বেদানা লিচু প্রতি ১০০ পিসের দাম সাড়ে তিন থেকে ৪০০ টাকা, বোম্বাই ১০০ থেকে ১২০ টাকা, মাদ্রাজি ১০০ টাকা, হাড়িয়া বেদানা ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একদিনে আমার লস হয়েছে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা।
Advertisement
কথা হয় বিরল উপজেলার চাষি আব্বাস আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, তার বাগানে লিচু ফেটে ঝড়ে পড়ছে। কোনোভাবেই লিচু গাছে রাখা যাচ্ছে না। তিনি এবার বড় ধরনের লোকসানে পড়বেন।
বিরল রবিপুর এলাকার লিচু ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম জানান, তিনি রবিপুর ও মাধববাটি এলাকায় চারটি বাগান লিজ নিয়েছেন। বাগানে বোম্বাই লিচু আছে। গত চারদিনের প্রচণ্ড তাপদাহে তার বাগানের সিংহভাগ লিচুতে পোড়া দাগ দেখা দিয়েছে। এখন ফেটে গিয়ে ঝড়ে পড়ছে। কোনো পাইকার লিচু কিনতে চাচ্ছেন না। তিনি লিচু নিয়ে এখন কী করবেন তা বুঝতে পারছেন না। তাকে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হবে।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বলেন, এবার তাপমাত্রা অনেক বেশি। চলমান তাপদাহে লিচুর কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। এখন আর কিছু করার নেই। যেসব লিচু পেকে গেছে যত দ্রুত সম্ভব বাজারজাত করা উচিত।
তিনি বলেন, দিনাজপুরে এবার পাঁচ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধেক লিচু গাছ থেকে নামিয়েছেন বাগানিরা।
Advertisement
এমআরআর/জেআইএম