সাইকেল চালাতে পছন্দ করেন অনেকেই। এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। সাইক্লিং আসলে এক ধরনের শরীরচর্চা। যা শারীরিক সুস্থতায় বিশেষ অবদান রাখে। সাইকেল চালানোকে মাঝারি থেকে হালকা তীব্রতার ওয়ার্কআউট বলে বিবেচনা করা হয়। তবে প্রতিদিন আপনি কতটা সময় সাইক্লিং করছেন তার উপরই এই সুস্থতা নির্ভর করে।
Advertisement
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন ১৫ মিনিট সাইকেল চালালে কেউ খুব বেশি ক্লান্ত বোধ করবেন না ঠিকই তবে অনেকখানি ক্যালোরি পোড়াতে পারবেন। অন্যান্য ব্যায়ামের তুলনায় সাইকেল চালানোর সবচেয়ে বড় সুবিধা।
আরও পড়ুন: সাইকেল কেনার সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন
এছাড়া কম সময়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে সাইকেলের সুবিধা অনেক। পরিবেশ দূষণ থেকে বাঁচানোর পাশাপাশি যানবাহনের চলাচলের খরচও বাঁচায় সাইকেল। বিশ্বের অনেক দেশেই এখন বেড়েছে সাইক্লিংয়ের জনপ্রিয়তা।
Advertisement
কিছু কিছু দেশে তো সাইকেল চলাচলের জন্য বিশেষ লেন ও রাস্তাও আছে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক প্রতিদিন সাইকেল চালালে শরীরে ঠিক কী কী ঘটে-
ওজন কমে
নিয়মিত সাইক্লিং করা ওজন কমাতে সাহায্য করে। সাইক্লিং কার্ডিও ওয়ার্কআউটের মধ্যে পড়ে। এর মাধ্যমে প্রতি ১৫ মিনিটে ১৫০-২০০ ক্যালোরি পোড়াতে পারবেন আপনি।
আরও পড়ুন: ওজন কমানোর সহজ ১০ ব্যায়াম
Advertisement
শরীরের নিম্নাঙ্গের যেমন-কোমর, হিপ, পায়ের রানের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাইক্লিং সবচেয়ে কার্যকরী ওয়ার্কআউট। শুধু সাইকেল চালানোর সময়ই নয় বরং এর পরেও ক্যালোরি বার্ন হবে। যা সত্যিই অবিশ্বাস্য।
পায়ের পেশি শক্তিশালী হয়
অনেকেরই ভুল ধারণা আছে যে, খুব বেশি সাইকেল চালালে জয়েন্ট ও হাঁটুতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। বিষয়টি কিন্তু ঠিক এর উল্টো, অর্থাৎ সাইকেল চালানো কখনো আপনার জয়েন্ট বা হাঁটুতে চাপ সৃষ্টি করে না।
বরং সাইকেল চালানোর সময় যে চাপ অনুভূত হয় তা পায়ের পেশিগুলোকে আরও শক্তিশালী করে। নিয়মিত মাত্র ১৫ মিনিট সাইকেল চালালে আপনার গ্লুটস, কোয়াডস ও হ্যামস্ট্রিং ফিট থাকবে।
আরও পড়ুন: ব্যায়াম না করেও কি ওজন কমানো যায়?
মৃত্যুঝুঁকি কমে
বিভিন্ন গবেষণা প্রমাণ করে যে, নিয়মিত সাইকেল চালানো (সেটি ১৫ মিনিট বা এক ঘণ্টাই হোক) মৃত্যুঝুঁকি কমায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। আরেকটি গবেষণা প্রমাণ করে, সাইকেল চালানো ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে
মানসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটায় সাইক্লিং। সাইকেল চালানোর সময় মস্তিষ্ক বেশি অক্সিজেন গ্রহণ করে যা চিন্তার গতি, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
এছাড়া সাইকেল চালালে খুশির হরমোন এন্ডোরফিনের মাত্রা বাড়ে, ফলে মেজাজ ভালো থাকে ও উদ্বেগ কমে। দৈনিক ১৫ মিনিট একটানা সাইকেল চালালে কর্টিসলের (স্ট্রেস হরমোন) মাত্রা কমে। ফলে রাতে ভালো ঘুম পেতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: জিমে ব্যায়াম করার সময় যে ভুলে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক!
হার্ট ভালো থাকে
নিয়মিত সাইকেল চালানোর মাধ্যমে হৃদয়কেও সুস্থ রাখতে পারেন। কার্ডিওভাসকুলার বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে সাইক্লিং। ৫ বছর ধরে পরিচালিত ১৫০০ জনের উপর করা এক গবেষণায় দেখা যায়, এ সময়ের মধ্যে নিয়মিত যারা সাইকেল চালাতেন তাদের উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমেছে ৩০ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা হার্টের সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদেরও দৈনিক কিছু সময় সাইকেল চালানোর পরামর্শ দেন। কারণ এতে হার্টবিট বাড়ে ও রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
মেরুদণ্ড শক্তিশালী হয়
নিয়মিত সাইকেল চালালে মেরুদণ্ড আরও শক্তিশালী হয় ও সোজা হয়ে বসার এই অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়তা করে। এই অভ্যাস পরবর্তীতে আপনাকে কুঁজো ও ব্যাকপেইনের সমস্যা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: ডায়েট-ব্যায়াম করেও যে ভুলে ওজন কমছে না
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সাইকেল চালানোর বিকল্প নেই। এজন্য আপনাকে লোক দেখানোর জন্য খুব দামি সাইকেল কিনতে হবে না। নিয়মিত যাতায়াতের জন্য আপনি একটি সাশ্রয়ী সাইকেল কিনতে পারেন।
আর যদি ঘরেই সাইক্লিং করতে চান তাহলে এক্সারসাইজিং সাইকেল/এয়ার বাইক কিনে নিন। নিয়মিতভাবে ১৫ মিনিট কিংবা আধা ঘণ্টা করে অনুশীলন করতে হবে। তাহলেই আপনি থাকবেন সুস্থ।
সূত্র: হেলথ অ্যান্ড হেলদিয়ার
জেএমএস/এমএস