মুহাম্মদ আলী একজন মার্কিন পেশাদার মুষ্টিযোদ্ধা ছিলেন। যাকে ক্রীড়ার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হেভিওয়েট হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। ১৯৪২ সালের ১৭ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কেন্টাকিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম ছিল ক্যাসিয়াস মার্সেলাস ক্লে জুনিয়র।
Advertisement
লুইভিলার পুলিস অফিসার ও বক্সিং প্রশিক্ষক জো মার্টিন একদিন ক্লেকে একজন সাইকেল চোরের সঙ্গে মারপিট করতে দেখেন। তখন ক্লের বয়স মাত্র ১২ বছর। তিনি ক্লেকে বক্সিং শেখার পরামর্শ দেন। এর পরবর্তী চার বছর বক্সিং কাটম্যান চাক বোডাক তাকে প্রশিক্ষণ দেন।
ক্লে ১৯৫৪ সালে প্রথম অপেশাদার বক্সিং প্রতিযোগিতায় নামেন। তিনি ছয়বার কেন্টাকি গোল্ডেন গ্লাভস উপাধি, দুইবার জাতীয় গোল্ডেন গ্লাভস উপাধি, একবার অ্যামেচার অ্যাথলেটিক ইউনিয়ন জাতীয় উপাধি এবং রোমে অনুষ্ঠিত ১৯৬০ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে বক্সিং প্রতিযোগিতায় লাইট হেভিওয়েট বিভাগে স্বর্ণপদক লাভ করেন। অপেশাদার বক্সিং প্রতিযোগিতায় ক্লে ১০০বার জেতেন ও মাত্র পাঁচ বার পরাজিত হন।
ক্রীড়াজীবনের শুরুর দিকে আলী রিংয়ের ভেতরে ও বাইরে একজন অনুপ্রেরণাদায়ক ও বিতর্কিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। স্পোর্টস ইলাস্ট্রেটেড তাকে শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় ও বিবিসি তাকে শতাব্দীর সেরা ক্রীড়াব্যক্তিত্ব হিসেবে সম্মানিত করেছে।
Advertisement
একসময় তিনি নেশন অব ইসলামে যোগদান করে তার নাম পরিবর্তন করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি সুন্নি ইসলামে ধর্মান্তরিত হন। এর আগে ১৯৬৭ সালে আলী তার ধর্মীয় বিশ্বাস ও ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকার অংশগ্রহণের বিরোধিতার কারণে মার্কিন সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক যোগদান করতে অস্বীকৃত হন। এর কয়েকদিন পরে তাকে এই কারণে দোষী সাব্যস্ত করে তার বক্সিং উপাধি কেরে নেওয়া হয়। তিনি তার জীবনের সেরা সময়ে পরবর্তী চার বছর কোন ধরনের বক্সিং প্রতিযোগিয়ায় নামতে পারেননি।
১৯৭১ সালে তার আপীল সুপ্রিম কোর্টে পেশ হয়, যেখানে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সরিয়ে নেওয়া হয়। যুদ্ধের বিরুদ্ধে আলীর বিবেকজনিত কার্যকলাপ তাকে সংস্কৃতি বিরোধী প্রজন্মের নিকট শ্রদ্ধার পাত্র করে তোলে। বক্সিং জগতে ফিরে এসে আলী ১৯৭৪ ও ১৯৭৮ সালে আবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নেন।
পেশাদার কুস্তিগীর জর্জ ওয়েগনার দ্বারা অনুপ্রাণিত আলী বক্সিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কহীন বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ও সাক্ষাতকারে স্পষ্ট মতামত জানাতে দ্বিধা করতেন না। আলী শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের বিরোধিতা করে আফ্রিকান আমেরিকান ক্রীড়াজগতের অবস্থান পরিবর্তন করতে সক্ষম হন। ২০১৬ সালের ৩ জুন শ্বাসনালীর সংক্রমণে অ্যারিজোনায় মুহাম্মদ আলী মৃত্যুবরণ করেন।
কেএসকে/এমএস
Advertisement