২০২৩-২৪ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটকে রপ্তানি বহুমুখীকরণ, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের পরিপ্রেক্ষিতে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এই বাজেট স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক হবে।
তিনি আরও বলেন, আমদানিকে নিরুৎসাহিত করে দেশীয় শিল্পকে সমৃদ্ধ করতে সহায়ক হবে এবারের বাজেট। এছাড়া সার্বজনীন পেনশন চালু ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর উপকারভোগীদের ভাতা বাড়ানো, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ২২০০ শয্যায় উন্নীতকরণ ও চট্টগ্রামে চামড়া শিল্পনগরী স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে চট্টগামের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন> দাম কমবে যেসব পণ্যের
Advertisement
চেম্বার সভাপতি বলেন, বাজেটে মোট ব্যয় ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, মোট আয় ৫ লাখ কোটি টাকা এবং ঘাটতি ২ লাখ ৬১ হাজার ৭শ ৮৫ কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয় ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হবে। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা ব্যয় হবে যা সরকারের বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। ঘাটতি মোকাবিলায় ক্রমবর্ধমান ঋণের ক্ষেত্রে সরকারের সচেতন হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
নিট পরিসম্পদের মূল্যের ভিত্তিতে করদাতার সারচার্জ আরোপের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সীমা ৪ কোটি টাকা নির্ধারণ, ব্যাংক, তামাকজাত পণ্য ও মোবাইল ফোন কোম্পানি ব্যতীত অন্যসব ধরনের প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ নগদ ব্যয়সীমা ৩৬ লাখ টাকার শর্তসাপেক্ষে কর্পোরেট করহার ২.৫ শতাংশ কমানো হয়েছে যা ১ কোটি টাকা পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, দক্ষমানবসম্পদ তৈরিতে অ্যাসেট প্রজেক্টের আওতায় ৬ লাখের অধিক মানুষকে কারিগরি শিক্ষা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যা খুবই প্রশংসনীয়। এই প্রজেক্টের আওতায় চট্টগ্রামে ভারী শিল্পকারখানাসহ ভবিষ্যৎ শিল্পায়নের কথা বিবেচনা করে চট্টগ্রামে ন্যূনতম ১ লাখ প্রশিক্ষণার্থীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।
রাজউক এবং সিডিএর আওতাধীন ও বহির্ভূত এলাকায় জমি রেজিস্ট্রেশনকালে যৌক্তিকভাবে উৎসে করহার বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করা হয়েছে যার ফলে অবস্থানভেদে ভিন্ন ভিন্ন উৎস কর নির্ধারণের ফলে এ বিষয়ে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে যা পরিহারে সুষম উৎস কর নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেন তিনি।
Advertisement
আরও পড়ুন> ২০২৩-২৪ বাজেট/ সমৃদ্ধির সোপান ধরে স্মার্ট বাংলাদেশ
তিনি আরও বলেন, ডলার সংকটের কারণে অনেক অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ স্থগিত হয়ে আসছে। এর মধ্যে সিমেন্ট উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানিতে সুনির্দিষ্ট শুল্ক বৃদ্ধি করায় ক্রমবর্ধমান অবকাঠামোগত উন্নয়নের খরচ আরও বাড়িয়ে দেবে। তাই অবকাঠামোগত উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে এই শুল্ক পূর্বের ন্যায় করার সুপারিশ করেন।
ট্যারিফ যৌক্তিকীকরণ করতে গিয়ে ১৯১টি পোশাকশিল্পের পণ্যের নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করায় এই খাতের স্থানীয় উদ্যোক্তারা অসম প্রতিযোগিতা সম্মুখীন হতে পারে এবং অন্যদিকে ২৩৪টি প্যাকেটজাত মৎস্য পণ্যে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করায় দেশীয় মাছকে প্যাকেটজাত করার উদ্যোগ নিরুৎসাহিত হতে পারে বলে মাহবুবুল আলম মন্তব্য করেন।
ইকবাল হোসেন/এসএনআর/এমএস