২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংকিং খাত থেকে এক লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। সরকারের এ ব্যাংকনির্ভরতা বাড়ায় বেসরকারিখাতে ঋণপ্রবাহ সংকুচিত হবে। পাশাপাশি বাড়বে খেলাপিঋণ।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১ জুন) তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার একথা বলেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারি-বেসরকারি পার্টনারশিপ জরুরি। বিদ্যমান সংকটময় ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল করতে সরকার এ বিশাল আকৃতির বাজেট প্রণয়ন করেছে।
তবে দেশীয় অর্থনীতিতে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি, রাজস্ব ঘাটতি মেটানো ও অর্থায়ন নিশ্চিতকরণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রিজার্ভে স্থিতিশীলতা আনতে আমরা যে চ্যালেঞ্জিং সময় অতিবাহিত করছি তা মোকাবিলায় বাজেটে সরকার ব্যবসা এবং অর্থনীতির সমন্বয় করেছে বলে মনে করেন তিনি।
Advertisement
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে করমুক্ত ব্যক্তিগত আয়ের সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা করেছে, তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে সেটাকে পাঁচ লাখ টাকা করা প্রয়োজন। এছাড়াও করযোগ্য নয় এমন টিনধারীদের ওপর ন্যূনতম দুই হাজার টাকা আয়কর আরোপের সিদ্ধান্ত উচ্চ মূল্যস্ফীতির এ সময়ে স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর ওপর বোঝা তৈরি করবে। তাই এ প্রস্তাব প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।
‘কর আদায়ের জন্য এজেন্ট নিয়োগের বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি করে এজেন্টদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখলে করজাল বাড়বে বলে আমরা বিশ্বাস করি। ভ্যাট টার্নওভারের সীমা বাড়ানোসহ ভ্যাট রিটার্ন ও অডিট প্রক্রিয়া অটোমেশন করা প্রয়োজন।’
এছাড়াও রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যকার পার্টনারশিপ বাড়নোর প্রস্তাব করেন ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার।
তিনি বলেন, করপোরেট কোম্পানির উইথহোল্ডিং কর রিটার্নের সংখ্যা ২৯টির পরিবর্তে ১২টিতে নামানোর সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। তবে ডিসিসিআই মনে করে করপোরেট করের হার না কমানোর ফলে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে। করপোরেট করের হার ও ক্যাশ লেনদেনের সীমা ৩৬ লাখ টাকার পরিবর্তে বার্ষিক খরচের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
Advertisement
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, স্থানীয়ভাবে মোবাইল ফোনের উৎপাদনের ওপর ভ্যাট আরোপের কারণে এর উৎপাদন খরচ বাড়বে। আমাদের উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই এটা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়াও সফটওয়্যার, ইলেকট্রনিক্স, সোলার এনার্জি, লিফট ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং প্রভৃতি খাতের পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করায় এ খাতগুলোতে স্থানীয় শিল্পের সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি হবে।
জ্বালানিখাতে মূল্য সহনীয় রাখতে বাজেটে ১৩ ধরনের পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানিতে ট্যারিফ ভ্যালু ও ভ্যাট প্রত্যাহরের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় ডিসিসিআই।
ইএআর/এএসএ/জেআইএম