২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেছেন। এ বাজেটে শিক্ষাখাতে ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরে ছিল ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। টাকার অংকে গত অর্থবছরের চেয়ে এবার ৬ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা বেশি।
Advertisement
তবে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হিসাবে গত অর্থবছরের তুলনায় এবার বরাদ্দ কিছুটা কমেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে শিক্ষাখাতে মোট বরাদ্দ জিডিপির তুলনায় ছিল ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। অর্থাৎ শূন্য দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ কম।
এদিকে, এবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৩৪ হাজার ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরে ছিল ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৪২ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরে ছিল ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা। কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ১০ হাজার ৬০২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা।
ইউনেস্কোর পরামর্শ অনুযায়ী- একটি দেশের মোট জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষাখাতে ব্যয় করার কথা থাকলেও আগামী অর্থবছরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা এবং মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষার জন্য মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ বা ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা শিক্ষাখাতে বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা ছিল ১২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বা ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা।
Advertisement
এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে সার্বিক ঘাটতি দুই লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংকসহ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এক লাখ ৫০ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা এবং বিদেশি উৎস থেকে এক লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিসভার বিশেষ এ বৈঠকে ৭ কোটি ৬১ লাখ ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়।
এরপর বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হয় বাজেট অধিবেশন। পরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট পেশ করেন। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাজেট অধিবেশন মুলতবি করা হয়।
এবারের বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম ‘উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’। এটি স্বাধীন বাংলাদেশের ৫২তম বাজেট। আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদের ১৫তম বাজেট এটি।
Advertisement
নতুন অর্থবছরের এ বাজেট প্রস্তাব দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, চারটি মূল স্তম্ভের ওপর স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে রয়েছে- স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সমাজ ও স্মার্ট অর্থনীতি।
প্রস্তাবিত বাজেট ২৬ জুন অনুমোদন হবে এবং ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হচ্ছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বিশাল এ বাজেটের ঘাটতি দুই লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে দুই লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ।
এমএইচএম/এএএইচ/জেআইএম