বাঁধের পানিতে পড়ে যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে কয়েক লাখ লিটার পানি সেচে ফেলার নির্দেশ দেওয়া সেই ভারতীয় কর্মকর্তাকে মোটা অংকের জরিমানা করা হয়েছে। নিজের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন উদ্ধারে কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই জলাধার থেকে ৪১ লাখ লিটার সেচে ফেলার নির্দেশ দেন। এতে খরচ হয় প্রায় ৫৩ হাজার রুপি।
Advertisement
বিবিসি জানিয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে রাজেশ বিশ্বাস নামে ওই খাদ্য পরিদর্শককে। তার দাবি, পানিতে পড়ে যাওয়া ফোনটিতে সরকারি স্পর্শকাতর তথ্য ছিল। তাই সেটি উদ্ধার করা জরুরি হয়ে পড়েছিল।
আরও পড়ুন>> সেলফি তুলতে গিয়ে সরকারি কর্মকর্তার ফোন পানিতে, উদ্ধারে জলাধার সেচ
জানা যায়, গত সপ্তাহে ছত্তিশগড়ের খেরখাট্টা বাঁধ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে সেলফি তোলার সময় হঠাৎ জলাধারের পানিতে পড়ে যায় স্যামসাং ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন, যার দাম ছিল এক লাখ রুপি।
Advertisement
সেটি উদ্ধারে প্রথমে স্থানীয় ডুবুরিদের জলাধারে নামানো হয়। কিন্তু তারা ফোনটি খুঁজে পাননি। পরে পানি সেচে ফেলার জন্য আনা হয় ডিজেলচালিত পাম্প। পাম্পটি সেখানে চালানো হয় কয়েক দিন ধরে এবং পাম্প দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার পানি তুলে ফেলা হয়।
আরও পড়ুন>> কাশ্মীরের ‘উন্নয়ন’ দেখাতে গিয়ে পটুয়াখালীর ছবি ব্যবহার
কিন্তু ফোনটি যখন উদ্ধার করা হয় তখন দেখা যায় ফোনের ভেতর পানি ঢুকে ফোন অচল হয়ে গেছে।
সেসময় রাজেশ বিশ্বাস ভারতীয় মিডিয়াকে বলেছিলেন, জলাধারের ‘কিছু পানি’ কাছের একটি খালে নিষ্কাশন করার জন্য এক কর্মকর্তার কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়েছিলেন তিনি। তার দাবি, এই কাজে কৃষকদেরই উপকার হতো।
Advertisement
#Chhattisgarh | An official was suspended for allegedly having water pumped out of a reservoir to find his mobile phone that fell into it while taking a selfie with his friends during a picnic on Sunday.Read the full story: https://t.co/thie5hPVye pic.twitter.com/FXLDpShhfK
— The Indian Express (@IndianExpress) May 27, 2023কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কর্তৃপক্ষ রাজেশকে তার পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
কয়েকদিন আগে রাজ্যের সেচ দপ্তর একটি চিঠি পাঠিয়ে তার পদক্ষেপের কারণে জরিমানা করার বিষয়টি জানায়। ওই চিঠিতে বলা হয়, রাজেশ বিশ্বাস ৪১ লাখ লিটার (৮ লাখ ৮০ হাজার গ্যালন) পানি অপচয় করেছেন তার ‘ব্যক্তিগত স্বার্থে’। তাকে এই পানির দাম পরিশোধ করতে হবে। সেই সঙ্গে ‘বিনাঅনুমতিতে পানি সরানোর দায়ে’ তাকে ১০ হাজার রুপি জরিমানা দিতে হবে।
আরও পড়ুন>> রাস্তার গর্ত বন্ধ করায় লাখ টাকা জরিমানা!
চিঠিতে আরও বলা হয়, রাজেশ ‘অবৈধ’ কাজ করেছেন এবং ‘ছত্তিশগড়ের সেচ আইনের ধারা অনুযায়ী তার এই কাজ শাস্তিযোগ্য’।
সরকারি কর্মকর্তার ওই ঘটনার খবর জানাজানি হতেই সারা ভারতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। বহু রাজনীতিক এমন পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেন এবং বলেন, যেখানে দেশের বহু অংশে পানির অভাব দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে গ্রীষ্মের দাবদাহের কারণে, সেখানে এক ব্যক্তির স্বার্থে এভাবে পানির অপচয় না করে তা আরও ভালো কাজে লাগানো যেতো।
কেএএ/