আগেও একটি ম্যাচে শেষ ওভারে ১২ রান বাঁচিয়ে দলকে জিতিয়েছিলেন মোহিত শর্মা। ফাইনালেও গুজরাটের অধিনায়ক বল তুলে দিয়েছিলেন তার হাতে। প্রথম চারটি বল ভাল করলেও শেষ দুই বলে ১০ রান হজম করেন। দলও হারলো।
Advertisement
এমন একটি পরিস্থিতির পর সে রাতে কিছুতেই ঘুমাতে পারেননি মোহিত শর্মা। বার বার তার মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিলো, শেষ দুই বলে ছক্কা এবং চার খাওয়ার বিষয়টি।
অথচ মোহিত হতে পারতেন নায়ক। শেষ দুটি বলকে যদি আগের চার বলের মতো ডেলিভারি দিতে পারতেন, তাকে ঘিরেই আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠতে পারতেন গুজরাতের ক্রিকেটাররা। অথচ, দিন শেষে তিনি ট্র্যাজিক হিরো হয়েই থেকে গেলেন।
শেষ দুই বলে ছক্কা এবং বাউন্ডারি হজম করার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি অনলাইনকে মোহিত শর্মা বলেছেন, ‘কিছুতেই ঘুম আসেনি। বার বার ভাবছিলাম, কি করতে পারলে ম্যাচটা জিততে পারতাম? কোন বল দিলে ভাল হত সেটাও ভাবছিলাম। একদম ভাল লাগছে না ম্যাচটা হেরে। মনে হচ্ছে, কোথাও কিছু একটা যেন হারিয়ে ফেলেছি। চেষ্টা করছি সময়টা দ্রুত পেরোতে ‘
Advertisement
শেষ বলে জিততে চেন্নাইয়ের দরকার ছিল চার রান। কী পরিকল্পনা ছিল তখন? মোহিত বলেছেন, ‘চেয়েছিলাম ইয়র্কার দিতে। প্রতিপক্ষের ব্যাটারের উপরই ফোকাস ছিল এবং নিজেই নিজেকে অনুপ্রাণিত করছিলাম। পুরো আইপিএল জুড়ে সেটাই করেছি। বলটা এমন জায়গায় পড়ল যেখানে পড়া উচিত ছিল না। জাদেজার ব্যাটে লেগে গেল। নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কাজে লাগেনি।’
ম্যাচ শেষে মোহিত শর্মাকে কাঁদতে দেখা গেছে। শেষ ওভারে জেতার জন্য দরকার ছিল ১৩ রান। এরকম পরিস্থিতিতে অতীতেও বল করেছেন। নেটেও এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করে অনুশীলন করেছেন। সোমবারের ফাইনালে মোহিত একসময়ে গুজরাট টাইটান্সকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন। রাইডু আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছিলেন। মোহিতকে দুটো ছক্কা ও বাউন্ডারি মারেন। সেই মোহিতই ফেরান রাইডুকে। পরের বলেই ধোনি আউট হন। ম্যাচে ফিরে আসে গুজরাট।
মোহিত বলছেন, ‘আমি কী করতে চাই সেদিক থেকে পরিষ্কার ছিলাম। নেটে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করে আমি আগেও বল করেছি। সে কারণে আমি বল চেয়ে নিয়েছিলাম। সবক’টা বল ইয়র্কার করতে চেয়েছিলাম। মন যা বলছিল, সেটাই আঁকড়ে ধরেছিলাম।’
শেষ ওভারের আগে গুজরাট টাইটান্স অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ডিয়ার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা হচ্ছিল মোহিতের। তার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চান পাণ্ডিয়া। উত্তরে মোহিত বলেছিলেন, ‘আমি ইয়র্কার দেওয়ার চেষ্টা করবো। মানুষ এখন নানাধারনের কথা বলছেন, তবে সেগুলোর অর্থ নেই। জাদেজার গোড়ালি লক্ষ্য করে ইয়র্কার দিতে গিয়েছিলাম। তবে বলটা যে জায়গায় পড়েছিল, সেখানে পড়া উচিত ছিল না। ব্যাটে বলে কানেক্ট করে ফেলে জাদেজা।’
Advertisement
তার পরের দৃশ্য তো সবাই দেখেছে। ব্যাট উঁচিয়ে দৌড়াচ্ছেন জাদেজা। আর মোহিত শর্মা ভেঙে পড়েছেন কান্না এবং হতাশায়।
আইএইচএস/