মৃত্যু
Advertisement
মৃত্যু—সুন্দর, সাবলীল এবং মায়াময় এক শহরের নামযার প্রতিটি অঙ্গ কারুকার্য আর সত্য অলংকার;—লেপ্টে আছে গন্তব্যহীন গন্তব্যের শরীরে!আহা ফুরানোপ্রায় গর্ব আমারতোমার মুখে করুণা সাঁতরায়চোখ ভিজে যায় একাকিত্বের ওমে—দুরবিনে জড়ানো সময় হেসে ওঠে বিন্দাস।প্রবাহিত সবুজের মতো সুর করে ডেকে যায়নিষেধ পাখনার আড়ালে; ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে যায় নদীর কৃপণ বৈঠায়।
বিছানাবন্দি আকাশ—শখের সমুদ্র বিন্যাস ভেসে যায় নরম ছায়ায়।যতদূর ঘুম আমার—তারও দূরে অতিবাহিত হও তুমি;কোহেকাফ তবু নিভে যায় নিজস্ব নিয়মে,যন্ত্রণার অবুজ সংকেত নেচে ওঠে অন্তহীন গর্তের মুখে।মৃত্যু, ও আমার স্বতন্ত্র প্রেমিকাতোমার কিশোরী খোঁপায় ডুবে যাই আমি—কবুতর মাসে বেঁচে ওঠার লোভে!
তুমি সন্দেহের ফাইল নিয়ে উধাও—যেন সেইসব পুঁটি মাছের ক্ষুধা নিয়ে আমি এখনোফুটে যাচ্ছি বিলে, সাদা চুমুতে লিখিত হয়েছি চুপচাপ;আবার ধানের মায়ায় ফিরেছি শীতের মসৃণ পিঠে।মৃত্যু, মুখোমুখি হাসো—ছুঁয়ে দিই তোমার থিতানো অহম,বিস্তৃত হই অসুখের দুর্লভ গ্রীবায়, ডুবে বাঁচার সুখে হেসে উঠি আরেকবার।
Advertisement
****
সহসা চৈত্র
ঘরে ফিরে দেখেছি সেলাই মুছে গেছে সুঁইয়ের কামে,নিজের নামে অস্থির অভ্যেস; পথ শুয়েছে ধুলোর খামে।বহুদিন দেখা নাই আমাদের; কোনোদিন শৈশবক্ষুধার্ত খোঁপার সিঁড়িহরতাল মাঠে মাঠেফুর্তির দেরাজে আড়িস্নান শেষে মুখোশ খসে যায় গর্তের !
গলি থেকে প্রবাহিত পথ—পকেটে; গভীর ঘুম তার,নিজের কাছে কাঁটাতার প্রচুর—ফেরা হয় না আমার।শর্তের ঢেকুর চোখে ছুটে যাচ্ছে রোদ্দুরথরথর তবুও একাবায়ান্ন সকাল নিয়েহেঁটে যায় মইদুর্লভ জাহাজের কানে।জানা যায় উঁকি হারানো কান্নারা জেগে আছে শস্যের চাতালেঘুমের বড়শিতে রক্তের দাগ; মুখোমুখি চাঁদ ছুটি যায় অকালে।
Advertisement
গাছের অভিধান এই নোলক লেপ্টানো দিনেতলিয়েছে শহর—বিশ্বাস বাগান; নিষেধ অভিমানে।ঠোঁটজুড়ে ঢেউমুখের ছায়ায় মুখকঠিন শ্রাবণভেসে যাচ্ছে পৌষের প্রলেপ।তবু আমি চুপচাপ—হেরে যাই, ফেরার লোভে ভিজে যাই সন্ধ্যায়কান্নারা শান দেয় কালোর পাজামায়সুঁইয়ের ঘ্রাণ নিয়ে সুতোরাও সাঁতরায়শুধু ঘরপাখি—শোক জ্বেলে রাখি অসহ্য সাহস মন্দায়।
****
অসুখ
সহজ একটি মুখসরল—সবুজ সাঁতারনিদ্রাতুর নীরবতায় কোকিল সমাজসব তোমার দেয়া আমার অহংকার;
সহস্র কান্নার ভাঁজে নিজেকে লেপ্টে রাখিঅন্ধের শোকে রোপণ করি নিজস্ব সন্ন্যাস,তোমার সুখি বারান্দায় রঙিন চোখ উৎপাদিত হয়—ছড়িয়ে যায় গর্তবাসী সমুদ্রে।ছোঁয়াছুঁয়ির দূরত্বে বেজে ওঠে শখের দুরবিন—
উৎসব হাটে রটে যায় একান্ত সন্ধ্যা কোরাসদ্রুতই হাত বদল হয় শীতের সকালদুপুর দলে পুড়ে যায় মোহের বাগানআত্মপ্রেম ভুলে ডুবে যাই নিষিদ্ধ কবরেনিজের কাছে নত হতে হতেআবার তোমার কাছে সমর্পিত হই।
তোমার ঢেউ ফোটানো ভ্রুসমস্ত সরল সিজদা অস্বীকার করেঅতি সাবধানে হেঁটে যায় ভবিষ্যৎ অহংকারে...
****
ফিরে আসা
এই ভিজে যাওয়া ভুলে যাবো একদিনকোনো ক্রমেই খুঁজে পাওয়া যাবে না সীমানা তার;আমিও ভয়াবহ অন্ধকারে ডুবে যাবো কান্নার পাশাপাশি বাড়ি ভাড়া নিয়ে নিবো ঠিকগাছে গাছে লেপ্টে দেবো জীবন—
গোছানো বাগান থেকে হাসলো না কেউকেবল উঁকির প্রশ্নে ফুটেছিল যারাতারাও ভুলে গেছে গৃহস্থ গ্রাম!আমাদের লাঠিহীন মুখ আর বাকিতে নেয়া হাসিপৌঁছে যাবে সকালের ঠিকানায়, তবুলাল মিথ্যার গভীরে ফুটে থাকবে নকল গোলাপ।
কথা নেই কোনো; পেছনে চলে গেছে মায়া—তবুও লিকলিকে বরষায় ফিরে আসিবারবার সাঁতারে নামি ডুবে যাওয়ার লোভে...
****
ফেরার নকশা
জানি তোমার মন খারাপ হয়ে আছেচোখের গ্রামে কুয়াশা লেপ্টে যাচ্ছে, বিস্তর;ঘুরেফিরে জাগ্রতই থাকছো ছুতোয়যেন ফিরে যেতে পারো কলিজার উনুনে।কোনো অগ্রহায়ণ-পৌষে খুশবু ছড়িয়েছো তুমুলমিঠে স্পর্শে ঢেউ তুলেছো নোনতা নদের নৌকায়আরও কত বাহারি কিলবিল নেচেছে স্রোতে...তুমি রটেছো নিজস্বীর ফাঁদে; অথচ অলসকোলাহল ভেঙেছে তাথই, নিঃসঙ্গ প্লাবন।
আমি জানি তুমি ফুটছো কোহেকাফ; তরঙ্গের বয়ানে,যতদূর নিমগ্ন ছাতারা উজ্জ্বল থাকে খুব।কোথাও জমেনি অস্থির আলসেমিতবু ঢেউ, ঊর্ধ্বগামী সরলতা ছড়িয়েছে দূর,নাবালক ক্ষুধায় ঢেকে গেছে ঈশ্বর!
সেসব জ্বলছে নাটাই, ঘুড়ি ও পিঁপড়ার দৌড়আগামীর পায়ে তুমি; ঘটেছো বিস্ময়।আর যত কাছাকাছি দুপুর, রোদের কানাকানিফিরেছে অসুখে—তোমার অদ্ভুত নোক্তায়।
জানি তোমার মন খারাপ হয়ে আছে,শিস বাজছে না ধানের সভায়অবশিষ্ট ক্ষুধায় তোমার মুখচ্ছবি ছেপে যাচ্ছে হরদম;এবং কাছাকাছি আর কোনো তুমি নেই!
এসইউ/এএসএম