দেশজুড়ে

স্লিপার নেই, রেল লাইন ঠিক রাখতে দেওয়া হলো বাঁশ

ময়মনসিংহ-গৌরীপুর রেললাইনে একটি সেতুতে ক্ষয়ে যাওয়া পুরোনো কাঠের স্লিপারের নিচে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। বাঁশ দুটি স্লিপারের সঙ্গে আটকাতে জিআই তার দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ক্ষয়ে যাওয়া কাঠের স্লিপার যাতে স্থানচ্যুত না হয় সেজন্য ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশের ফালি। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Advertisement

ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার বিসকা ইউনিয়নের বিসকা রেলওয়ে স্টেশন ও মজমপুর গ্রামের মাঝামাঝি আইড়া বিলের ওপর অবস্থিত রেলসেতুতে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, সেতুটির দৈর্ঘ্য অন্তত ২০ ফুট। এতে ১০টি পুরোনো ক্ষয়ে যাওয়া কাঠের স্লিপার ব্যবহার করা হয়েছে। সেতুটি দিয়ে ময়মনসিংহ থেকে ঝারিয়া, মোহনগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও চট্টগ্রামগামী ট্রেন চলাচলা করে।

স্থানীয় মঞ্জরুল হক জানান, আনুমানিক ২৫-৩০ বছর আগে একবার হরতালের সময় সেতুটি ভেঙে ফেলেন আন্দোলনকারীরা। পরে সেতুর ওপর কাঠের স্লিপার বসিয়ে লাইন চালু করা হয়। এরপর ময়মনসিংহ-গৌরীপুর রেললাইন নতুন করা হলেও সেতুটি আগের মতোই রয়ে গেছে। ক্ষয়ে যাওয়া পুরোনো কাঠের স্লিপারই রয়ে গেছে।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন পরপর যাতে কাঠের স্লিপারগুলো সরে না যায় সেজন্য বাঁশের ফালি ব্যবহার করা হয়েছে। সেতুর একটা স্লিপার একেবারেই ক্ষয়ে গেছে। ওই স্লিপারের নিচে দুটি বাঁশ ঢুকিয়ে জিআই তার দিয়ে বেঁধে দিয়েছে। এগুলো অবহেলা ছাড়া কিছুই না। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

মজমপুর গ্রামের হারুন অর রশিদ বলেন, ‘যেখানে লোহা বা কংক্রিটের ঢালাই করা স্লিপার দেওয়ার কথা, সেখানে দেওয়া হয়েছে বাঁশ। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের দাবি, খুব দ্রুত যেন বাঁশগুলো সরিয়ে নেওয়া হয় এবং মেরামত করা হয়।’

স্থানীয় জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘সরকারতো আর রেললাইনে বাঁশ দিতে বলেনি। যারা এ লাইনের দায়িত্বে আছেন তারাই লোহার স্লিপারের বদলে বাঁশ ব্যবহার করেছেন। এতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেতো আমাদের মতো সাধারণ মানুষের ক্ষতি হবে। কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই যেন এ সেতুতে লোহার স্লিপার ব্যবহার করা হয়।’

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আকরাম আলী বলেন, ‘বাঁশের ফালি লাগানো হয়েছে স্লিপারগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। এটা আমাদের অর্থনৈতিক বা ঠিকাদারের কাজের কোনো অবহেলার বিষয় না। আমাদের অনুমতির ভিত্তিতেই লাগানো হয়েছে। তবে, নতুন স্লিপার এলে এগুলো পরিবর্তন করা হবে।’

Advertisement

 

মঞ্জুরুল ইসলাম/এসআর/জিকেএস