পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় অবৈধ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে হতাহতদের পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। গত ১৬ মের ওই বিস্ফোরণকাণ্ডে প্রশাসনিক ব্যর্থতা ছিল স্বীকার করে সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। এছাড়া, ঘটনার ১১ দিন পরে ঘটনাস্থলে আসায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
Advertisement
আগেই এগরা কাণ্ডে নিহত ও আহতদের পরিবারগুলোর জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছিল রাজ্য সরকার। শনিবার (২৭ মে) নিজ হাতে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সসদ্যদের হাতে সেই ক্ষতিপূরণের চেক ও চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা ব্যানার্জী বলেন, এ ঘটনায় আমাদের চোখ খুলে গেছে। আগামী দু’মাসের মধ্যে রিপোর্ট আসবে। অবৈধ বাজি কারখানায় কাজ করে কারও যেন জীবন নষ্ট না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা হবে। আমরা পরিবেশবান্ধব বাজি তৈরির জন্য ক্লাস্টার তৈরি করে দেবো। জনবহুল এলাকার বাইরে হবে এই ক্লাস্টার।
আরও পড়ুন>> পশ্চিমবঙ্গে ফের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, নিহত ৩
Advertisement
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মানুষ চলে গেলে তার পরিবার পড়ে থাকে। এসব নিয়ে অনেকেই রাজনীতির জলঘোলা করেছে। আমি মানবিক সাহায্যের হাত বাড়াতে এসেছি, রাজনীতি করতে নয়।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, নিহতদের পরিবারগুলোকে আড়াই লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে এবং প্রতি পরিবারে একটি করে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হচ্ছে।
এদিন পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে মমতা বলেন, রাজ্যের পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছে। এই বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের মূলহোতা উড়িষ্যার কটকে একটি নার্সিংহোমে নামবদল করে ছিল। সেখানে আমাদের পুলিশ পৌঁছে গিয়েছিল। তাকে গ্রেফতারও করেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য, কিছু বলার আগেই মৃত্যু হয় তার!
আরও পড়ুন>> এক টেবিলে তিন মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপিবিরোধী জোটের ইঙ্গিত
Advertisement
মমতা বলেন, নিহত-আহতদের পরিবারের দুঃখ কখনো শেষ হয় না। তবু লড়াই চালিয়ে যেতে হয়। এটি আমার হাতে ছিল না, আপনার হাতেও ছিল না। অবৈধ বাজি তৈরি করা ঠিক নয়। যিনি এসব তৈরি করতেন, তিনি মারা গেছেন। তার পরিবারের দু’জনকে এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, কোথাও বাজি তৈরি হলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী থানার ওসিকে রিপোর্ট করবেন। যদি সেই ওসি অ্যাকশন না নেন, তাহলে আমার ওপর ছেড়ে দেন। আমি দু’দিনের মধ্যে ওই ওসিকে বদলি করবো।
গত ১৬ মে এগরায় একটি অবৈধ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ১১ জন নিহত হন। সিআইডি তদন্তে উঠে আসে, অবৈধ বাজি কারখানার মালিক কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানু বাগ আহত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের পার্শ্ববর্তী রাজ্য উড়িষ্যায় পালিয়ে গিয়ে ভুয়া আধার কার্ড (পরিচয়পত্র) ব্যবহার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
ডিডি/কেএএ/