ক্যাম্পাস

দুই সহকর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দুই সহকর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে মনোবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম অধ্যাপক এনামুল হক। তিনি গত রোববার এক শিক্ষককে যৌন হয়রানি করেন। পরে মঙ্গলবার বিভাগের আরেক শিক্ষককে উদ্দেশ্য করে এনামুল হক একই আচরণ করলে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে অভিযোগ করেন।

Advertisement

অভিযোগ পত্রে বলা হয়, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে বিভাগীয় সভাপতির অফিসকক্ষে স্বাক্ষরকারী শিক্ষকগণের উপস্থিতিতে বিভাগীয় শিক্ষক অধ্যাপক এনামুল হক আরেক নারী শিক্ষকের সঙ্গে যৌন হয়রানিমূলক আচরণ ও ভাষা ব্যবহার করেন।

অভিযোগ পত্রে আরও বলা হয়, আমরা পনের জন বিভাগীয় শিক্ষক ওই সময় কক্ষে উপস্থিত ছিলাম। সবার সামনে তিনি তার পরনের প্যান্ট খোলার ভঙ্গি করে বলেন, আমার সবসময় খোলা থাকে এবার তোরটাও খুলে ছাড়ব। এরকম বলতে বলতে নিজের কাপড় খোলার চেষ্টা করেন। এ সময় অন্য সহকর্মীরা তাকে নিবৃত্ত করে।

পরে মঙ্গলবার একাডেমিক কমিটির সভা শেষে সভাপতি বিভাগের সব শিক্ষককে বসতে বলেন, ড. এনামুল হককে তিনি সেদিন যে যৌন হয়রানিকমূলক আচরণ করেছেন এবং সেটি থেকে বিরত থাকার জন্য বললে তিনি আবারও অশোভন আচরণ করেন।

Advertisement

অভিযোগ পত্রে বলা হয়, আমরা এধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তার এ ধরনের ন্যাক্কারজনক আচরণের সুষ্ঠু বিচার ও শাস্তি দাবি করছি। হাইকোর্টের রায়ের আলোকে প্রণীত যৌন হয়রানি নিরোধ নীতিমালার আওতায় তার আচরণ কার্যত: যৌন হয়রানির সামিল। কর্মক্ষেত্রে তার এমন আচরণ সব নারী শিক্ষকের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

অভিযোগ পত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া, একই বিভাগের অধ্যাপক নাজমা আফরোজ, অধ্যাপক আঞ্জুমান শিরীন, অধ্যাপক সাবিনা সুলতানা, সহযোগী অধ্যাপক আঞ্জুমান শিরিন, সহযোগী অধ্যাপক মো. আশিক শাহরিয়ার, সহযোগী অধ্যাপক মো. নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, সহকারী অধ্যাপক ফিউজি আক্তার আক্তার এবং প্রভাষক সাদেকা বানু স্বাক্ষর করেন।

আরও পড়ুন: পরিচালকের সামনেই সহকর্মীকে তুই-তোকারির অভিযোগ

অভিযোগের বিষয়ে রাবি উপাচার্যকে সাতদিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ রাজশাহী জেলা ও রাবি শাখা এবং বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি।

Advertisement

এ বিষয়ে অধ্যাপক এনামুল হক বলেন, এটা মূলত একাডেমিক বিষয়ে মিটিং ছিল। মিটিংয়ে একাডেমিক বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কথা হচ্ছিল। সেখানে উত্তেজনাপূর্ণ কিছু কথাবার্তাও হয়েছে। এ সময় বিভাগের প্রায় সব শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। ওই সময়কার কথাবার্তাগুলো যদি যৌন হয়রানিমূলক আচরণ হয়ে থাকে তাহলে আমি শাস্তি মাথা পেতে নিবো।

এ বিষয়ে রাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা মঙ্গলবার বিকেলে উপাচার্য দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ধরনের বিষয়গুলো নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের পূর্বে সাধারণত লিগ্যাল সেলের পরামর্শ নেওয়া হয়। এ বিষয়েও লিগ্যাল সেলের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মনির হোসেন মাহিন/আরএইচ/এমএস