খেলাধুলা

চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই, বাংলাদেশই জিতবে

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বাংলাদেশের সামনে সমস্যা ছিল কন্ডিশন। অনেক লম্বা জার্নি করে যাওয়ার পর বিশ্রাম পায়নি। খেলতে নেমে যেতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কষ্টকর হলেও জয় স্বস্তির জয়টা পেয়েছে বাংলাদেশ। এবার বাছাই পর্বের সত্যিকার চ্যালেঞ্চের মুখোমুখি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এই বাধা টপকাতে পারলে বিশ্বকাপের মূল পর্ব প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাবে।যদিও আয়ারল্যান্ড আগের ম্যাচে ওমানের কাছে হেরেছে। তবু, সব মিলিয়ে আমি বলবো, দলটা ভালো। বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডকে বলা হয় জায়ান্ট কিলার; কিন্তু এ বিশ্বকাপে এসে দেখছি তারা নিজেরাই উল্টো `কিল` হয়ে গেলো। তবুও এই দলটিকে ভালো বলতে হবে। খারাপ দল তারা নয়।জোর দিয়ে বলছি, কারণ দলটির বেশ কিছু ক্রিকেটার কাউন্টিতে খেলতেছে। ৬-৭ জন ক্রিকেটার তো আছে, যারা দীর্ঘদিন এক সঙ্গে খেলছে। ফলে দলটির মধ্যে একধরণের ঐক্য বলুন আর বোঝাপড়া বলুন- গড়ে উঠেছে। আয়ারল্যান্ডের এই ক্রিকেটাদের, পোর্টারফিল্ড-পল স্টার্লিং, এদের বিপক্ষে খেলেছি অনেক দিন। ফলে এই দলটি সম্পর্কে আমিও অনেক জানি এবং এ কারণেই বলছি, ওমানের কাছে হেরে যাওয়াটা তাদের জন্য অঘটন; কিন্তু স্টিল নাউ তারা ভালো দল।সুতরাং, আয়ারল্যান্ড বলে আমাদের চাপ নেয়ার কিছু নেই। টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের সেট হয়ে খেলার চেষ্টা করতে হবে। আবার এদের মধ্যে অন্তত এক-দু`জন ব্যাটসম্যানকে লম্বা ইনিংস খেলতে হবে। তামিম যেটা খেলতে পেরেছে, ঠিক সেটাই।ব্যাটিংটা ভালো করতে পারলে, বোলিং নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। আমাদের বোলিংটা তো গত দেড়-দু বছর ধরেই খুব ভালো হচ্ছে। এ কারণে বোলারদের ওপর খুব আস্থা রয়েছে। ব্যাটিংটাই একটু সমস্যা মনে হয়। মূল টুর্নামেন্টে যাওয়ার আগে আমি মনে করি আমাদের ব্যটসম্যানরা যেন, এসব ম্যাচেই পুরোপুরি ফর্মে চলে আসে।ব্যাটসম্যানদের সবাইকেই টি-টোয়েন্টিসুলভ ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করা উচিৎ বলে আমি মনে করি। স্ট্রাইক রেটটা যেন ১২০ প্লাস থাকে। প্রতিটি ব্যাটসম্যানেরই এভাবে চেষ্টা করা উচিৎ।অনেকেই ভাবতে পারেন, তাসকিন-আরাফাত সানির ওপর সন্দেহের আঙ্গুল তোলার কারণে বাংলাদেশের বোলিং ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু আমার মনে হয় না এতে কোনো প্রভাব পড়বে। বোলারদের ওপর এ নিয়ে চাপ পড়ারই কথা না। তারা অনেক পেশাদার। অভিজ্ঞতাও হয়েছে অনেক। সুতরাং, এতো অল্পতেই ভেঙে পড়বে না তারা। আর আমার তো মনে হয়, কিছুই হবে না। আইসিসি হয়তো সাতদিনের মধ্যে পরীক্ষার কথা বলেছে। কিন্তু তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই বলেই মনে করি।তাসকিন-আরাফাত সানিরা গত এক-দেড় বছর ধরে খেলতেছে। তখন প্রশ্ন তোলে নাই, অথচ বিশ্বকাপের মতো জায়গায় এসে প্রশ্ন তুললো, আশা করি তেমন কিছু হবে না। আমার মনে হয়, মানসিকভাবে একটু চাপ দেয়া হলো, আর কিছু না। তাসকিন এশিয়া কাপে যেভাবে বল করলো তাতে অনেকেরই হয়তো তাকে নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কথা। এ কারণে মানসিকভাবে একটু চাপে রাখার জন্য হলেও এটা করা হয়েছে।আজ (আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে) হয়তো তারা নিজেদের সেরাটা দিয়েই প্রমাণ করার চেষ্টা করবে। বাকি যারা আছে তারাও আমার মনে হয় খারাপ না। সুযোগ পেলে নিজেদের আরও ভালোভাবে প্রমাণ করতে পারবে তারা। এছাড়া মুস্তাফিজ ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশের বোলিং নিয়ে এতোটা চিন্তা করার কারণ নেই বলেই মনে করি আমি।সুতরাং, আমাদের ম্যাচ যেহেতু এখন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে, সুতরাং এই ম্যাচ নিয়েই ভাবা উচিৎ সবার। আইরিশদের বিপক্ষে নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলেই জয় এসে যাবে। তারা যে বাংলাদেশের সামনে খুব বেশি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে এমনটাও নয়। আমাদের ভালোমানের স্পিনার আছে, ভালোমানের পেসার আছে। সুতরাং, আমাদের যে বোলিং অ্যাটাক আছে, এই অ্যাটাক নিয়ে আমার মনে হয় না আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেতে কষ্ট হবে, যদি আমরা একটু ভালো ব্যাটিং করতে পারি।ধর্মশালার কন্ডিশন নিয়ে কথা উঠতেছে। যদিও আমরা একটা ম্যাচ ইতিমধ্যেই সেখানে খেলে ফেলেছি। আমার মনে হয় তা এটা এখন আর কোনো সমস্যা নয়। খেলোয়াড়রাও মনে হয় ওখানকার পরিবেশের সঙ্গে ইতিমধ্যে মানিয়ে নিয়েছে।আইরিশ ক্রিকেটারদের মধ্যে চোখ রাখতে হবে পল স্টার্লিংয়ের দিকে। আমার কাছে তাকেই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মনে হয়। অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডও বেশ কয়েকবছর ধরে আয়ারল্যান্ড দলের অধিনায়ক। কেভিন ও নেইল ও`ব্রায়েন- দুই ভাই রয়েছে। এরা ভালো ক্রিকেটার। আরও উদীয়মান কয়েকটা ক্রিকেটার রয়েছে। ফিল্ডিংটা দারুণ করে। রান চেক দেয়ার ওস্তাদ। বোলিংটা হয়তো আমাদের মতো নয়, তবে লাইন-লেন্থ বজায় রেখে বল করার চেষ্টা করে তারা। মোটকথা নিজেদের যা সামর্থ আছে তা দিয়ে চেষ্টা করে খেলে যাওয়ার।আমরা যদি তাদের বোলারদের লাইন-লেন্থ ধরে একটু আক্রমণাত্মক হতে পারি এবং একটু ভালো ব্যাট করতে পারি, তাহলে জয়টা কোনো ব্যাপারই না। খুব সহজেই জয় পাবো আশা করি।লেখক: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক।আইএইচএস/বিএ

Advertisement