দেশজুড়ে

পটুয়াখালীতে ৪৬ শতাংশ শিশুর দেহে মাত্রাতিরিক্ত সিসা

পটুয়াখালীতে শিশুদের দেহে মিলছে ক্ষতিকর সিসার মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি। ৪৬ শতাংশ শিশুর শরীরে মাত্রাতিরিক্ত সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ইউনিসেফের উদ্যোগে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) গবেষণায় এতথ্য বেরিয়ে এসেছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকালে পটুয়াখালী সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে সিসা দূষণ প্রতিরোধে স্থানীয় নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে অবহিতকরণ ও জনসম্পৃক্ততা বিষয়ক কর্মশালায় এতথ্য জানানো হয়েছে।

সভায় ইউনিসেফ প্রতিনিধি জানান, পটুয়াখালী সদর উপজেলার কালিকাপুর এলাকায় ব্যাটারি পুনর্ব্যবহার দোকানের কর্মরত ও এর আশপাশ থেকে স্থানীয় শিশুদের রক্তের নমুনা এবং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের পঁচা কোরালিয়া এলাকার মোট ২৪৮ শিশুদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে এ গবেষণা করা হয়েছে।

বরিশাল ইউনিসেফ অফিসের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আহসানুল ইসলাম জানান, পটুয়াখালীর ৪৬ শতাংশ শিশুদের শরীরে মাত্রাতিরিক্ত সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। দেশের চার জেলায় শিশুদের রক্তে সিসার সক্রিয় উপস্থিতি মিলেছে। রক্তে সিসার উপস্থিতি থাকা শিশুদের মধ্যে ৬৫ শতাংশের রক্তে এর পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত, যারা উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে।

Advertisement

পটুয়াখালী, টাঙ্গাইল, খুলনা, সিলেট—এ চার জেলার শিশুদের ওপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। পরীক্ষার আওতায় আসা ৯৮০ শিশুর সবার রক্তে সিসার উপস্থিতি মিলেছে। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ শিশুরই রক্তে সিসার মাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি নির্ধারিত মাত্রা ৩ দশমিক ৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি। এর মধ্যে ২৪ মাস থেকে ৪৮ মাস বয়সী শিশুদের শতভাগের শরীরেই সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

‘শিশুদের জন্য সুস্থ জীবন বিনির্মাণে সিসা দূষণমুক্ত পরিবেশ আমাদের অঙ্গীকার’ স্লোগানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহযোগিতায় কর্মশালার আয়োজন করে সিভিল সার্জন অফিস।

সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক শিশু বিশেষজ্ঞ ও আফ্রিকান নাগরিক প্রিসিলা, ইউনিসেফ বরিশালের প্রধান আনোয়ার হোসেন, পটুয়াখালী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার, পটুয়াখালী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান প্রমুখ।

এসময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে মানবদেহে সীসা দূষণের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। সীসা দূষণের উৎস যেমন হলুদ, রং, পেট্রোল, সীসা, অ্যাসিড ব্যাটারি ইত্যাদি ওপর নিয়ন্ত্রণ করে সিসা দূষণ কমাতে হবে। পৃথক গবেষণার মাধ্যমে সীসা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

Advertisement

আব্দুস সালাম আরিফ/এসআর/জেআইএম